“Floats like a butterfly. Stings like a bee”.
“আইডলস”-এ আপনাকে নিয়ে লেখাটার শিরোনাম ছিলো এটাই। আর সেজন্যই বোধহয় গাভাসকারকেই সবচেয়ে বেশী হুল ফুটিয়েছেন আপনি অনেকদিন ধরে, যেখানে প্রজাপতি ওড়ার চিহ্ণমাত্রও ছিলনা।এটা দরকার ছিলনা।
দরকার ছিলনা ১৯৭৬-৭৭য়ে জন লিভারকে নিয়ে ভেসলিন বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার, যাতে আপনার আর ভারতের সম্মানহানিই হয়েছিল। ১৯৭৬য়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে বিমারের প্রতিবাদে টেস্ট ইনিংস ডিক্লেয়ার আর পাকিস্তানে সরফরাজ নওয়াজের টানা চারটি বাউন্সারের প্রতিবাদে ওডিআই ম্যাচ ছেড়ে দেওয়ার বিতর্কগুলো হয়ত এড়ানো যেত।
ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের অমৃতসরে ১৯৪৬য়ের আজকের দিনে জীবনের মাঠে নেমেছিলেন আপনি। আপনার ডাকনাম ছিল বিশু। ছোট থেকেই ক্রিকেট টানত আপনাকে। ডানহাতি ব্যাটিং আর বাঁহাতি স্লো অর্থোডক্স স্পিন বোলিং রপ্ত হয়ে গিয়েছিল আপনার খুব কম বয়সেই। সেই ছোটবেলা থেকেই আপনি স্পিন বোলার হিসেবে কাঁধ আর আঙ্গুলের শ্রেষ্ঠ ব্যায়াম মনে করতেন নিজের কাপড় নিজে কাচাকে। এবং এটা বহুদিন নিজে করে এসেছেন নিয়ম করে।
বাঁ হাতি অর্থোডক্স স্পিন বোলারের সব নিয়ম মেনেই আপনার ৬৭ টেস্টে ২৬৬ উইকেট বা ১০ ওডিআই-তে ৭ উইকেট যা বলেনা তা হল, এই “গাধা” পরিসংখ্যান টপকে, আপনার সময়ে (১৯৬৬ – ১৯৭৯) দুনিয়ার অন্যতম সেরা স্পিনার ছিলেন আপনিই। টেস্টে আপনার ১৯৬৯-৭০য়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২০.৫৭ গড়ে ২১ উইকেট, ১৯৭২-৭৩য়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২৫.২৮ গড়ে ২৫ উইকেট, ১৯৭৬-৭৭য়ে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৩.১৮ গড়ে ২২ উইকেট, ১৯৭৬-৭৭য়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২২.৯৬ গড়ে ২৫ উইকেট আর ১৯৭৭-৭৮য়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২৩.৮৭ গড়ে ৩১ উইকেট নেওয়া, সেই সময়ের দুনিয়ার অন্যতম সেরা স্পিনার ছাড়া আর কেউ পারত না।
এর সত্যতার প্রশ্ন আদালতে উঠলে, সেই সময়ে আপনার বোলিংয়ের ঘূর্ণিঝড় সামলাতে ব্যর্থ ব্যাটসম্যানদের লম্বা লাইন এর সমর্থনে জোরালো সাক্ষ্য দেবে। টেস্ট প্রতি মেডেন ওভার নেওয়াতে বিশ্বে দ্বিতীয় ছিলেন (১৬.৩৫) আপনি, ল্যান্স গিবসের (১৬.৬২) পরেই।
আর আপনার আসলি “বাঁ হাতের খেল” তো ছিল প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে। আপনার ৩৭০টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে ছিল ১৫৬০ উইকেট। সঙ্গে ছিল ৭টি অর্ধশতকসহ ৩৫৮৪ রান (সর্বোচ্চ ৬১ রান)। যার মধ্যে ছিল ১০৬ বার এক ইনিংসে ৫ উইকেট আর ২০ বার এক ম্যাচে ১০ উইকেট। আপনার সেরা বোলিং ছিল ৫ রানে ৭ উইকেট।
শুধু একটু ডিপ্লোম্যাট যদি হতেন আপনি!
এখনো সময় আছে, একটু ডিপ্লোম্যাট হবার। আজ তো সবে ছিয়াত্তরের রানআপ পেরোলেন আর দ্বিতীয়বার দাদু হলেন মাসকয়েক আগেই।
শুভ জন্মদিন, বিষাণ সিং বেদী।