আসন্ন বিশ্বকাপে ভারতের প্রধান প্রতিপক্ষ কে বা কারা? কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি হওয়া একটি শিশুও হয়তো এর উত্তর দিয়ে দেবে। কিন্তু সত্যি কি অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, ইংল্যান্ডের মতো দলগুলো ভারতের প্রতিপক্ষ নাকি নিজেরাই নিজেদের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ? নিজেদের চোট, আঘাত, দায়িত্বজ্ঞানহীনতার মতো প্রতিপক্ষকে বাদ দিয়ে অন্য প্রতিপক্ষের দিকে নজর দেওয়ার সময় এবং সুযোগ কি ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের আছে?
বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক ৪২ দিন আগে যখন এই লেখাটা পড়বেন, তখন ট্রফির অন্যতম দাবিদারদের মধ্যে কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই দল ঘোষণা করে দিয়েছে। অর্থাৎ প্রাথমিক বার্তা, আমরা প্রস্তুত। আর ঠিক সেই সময় ভারতীয় নির্বাচকরা অনেকটাই নির্ভরশীল কয়েকজন ডাক্তার বা মেডিকেল স্টাফের উপর। বুমরা, হর্ষল প্যাটেল এনসিএ-তে, জাদেজা মুম্বাইয়ের হসপিটালের জানলা দিয়ে আরব সাগরের ঢেউ গুনছেন, রাহুল চোট সারিয়ে ফিরে সবে একটা প্রতিযোগিতা খেললেন আর অধিনায়কের হ্যামস্ট্রিং কিন্তু অনেকদিন ঠিক আছে(!)।
একটু পিছিয়ে যাই। ২০১৯ বিশ্বকাপের শুরু দিকে রাহুল মিডল-অর্ডারে ব্যাট করছিলেন। শিখরের হঠাৎ পাওয়া চোট রাহুলকে উপরে তুলে আনলো আর সেই সঙ্গে লোয়ার-অর্ডারের ভারসাম্য নষ্ট হলো যার ফল অনেকাংশেই ভুগতে হলো সেমি-ফাইনালে (সঙ্গে অন্য কারণ অবশ্যই ছিল)। কয়েকদিন আগের এশিয়া কাপেও একই ব্যাপার। জাদেজার বেমক্কা চোট দলের ভারসাম্য পুরো ঘেঁটে দিল, সঙ্গে আবেশ খান অসুস্থ হয়ে মাঠে নামতে পারলেন না, অধিনায়ক দুটো সমস্যাই শেষ সাংবাদিক সম্মেলনে স্বীকার করলেন, যেটা দেখে সত্যি ভাল লাগলো, মনে হলো একটু হলেও পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে।
এই সঙ্গে যোগ করুন বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগের মুহূর্তে ২২ দিনের মধ্যে প্রায় ন’হাজার কিলোমিটার ভ্রমন সমেত ন’টা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা, নতুন কেউ চোট পাবেন না এই গ্যারান্টি কেউই দিতে পারবেন না। আর একটু চিন্তাভাবনা করে সূচী প্রস্তুত করলে হয়তো হোটেল বুকিংও করতে হতো না। হার্দিকরা সুস্থ থাকবেন তো নাকি বিশ্বকাপের একদম প্রাক মুহূর্তেও বিশ্রাম থিওরি চলবে!
অর্থাৎ যা দাঁড়ালো, পাকিস্তান ম্যাচ অনেক দূর, তার আগে চোট-আঘাতের বিপক্ষে খেলতে হবে। আর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করতে ভুলেই গিয়েছিলাম, অস্ট্রেলিয়াতেও কিন্তু সমুদ্র আছে। স্কি-বোটিং, ডাইভিং চলতেই পারে!