১,০২০ দিন! হ্যাঁ, যে মানুষটা ১০২.০ দিন শতরান না করলেই সমর্থকদের মধ্যে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা হতো সেই ব্যাটার এক হাজারের বেশি দিন ধরে শতরান না পেলে সমর্থকদের বা তাঁর নিজের কি অবস্থা হয়, সহজেই অনুমেয়। প্রথম-সারির ভারতীয় ব্যাটার, যাঁর ন্যূনতম কুড়িটা আন্তর্জাতিক শতরান আছে, তাঁদের যে কোন দু’টি আন্তর্জাতিক শতরানের মধ্যে সবচেয়ে বেশী দূরত্ব শুধুমাত্র দিনের হিসেবে প্রায় ১,১৫০। যে সময়টা নিয়েছিলেন সুনীল গাভাসকার তাঁর চতুর্থ থেকে পঞ্চম শতরানে পৌঁছতে, যদিও মধ্যবর্তী সময়ে তিনি মাত্র আটটি টেস্ট খেলেছিলেন। অর্থাৎ এই হিসেবে তিনিও তুলনাতেই আসেন না।
সুতরাং নিঃসন্দেহে এই শতরান বিরাটকে প্রচন্ড মানসিক প্রশান্তি দেবে, পুরনো আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করবে। যেটা হয়তো আসন্ন বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের জন্য এক বিরাট প্লাস পয়েন্ট হতে চলেছে। কিন্তু বাকিটা?
এই যে ১,০২০ দিন, এর মধ্যে ৮৪টা আন্তর্জাতিক ম্যাচে বিরাট অংশ নিয়েছেন। খুঁটিয়ে দেখলে এই ৮৪টা ম্যাচের মধ্যে ন’বার উনি ৭৫ পেরিয়েছেন অথচ নব্বইয়ের ঘরে ঢুকতে পারেননি। অর্থাৎ কেরিয়ারের সবথেকে বাজে সময়, যখন টেস্ট গড় সাতান্ন থেকে পঞ্চাশের নীচে নেমে গেছে, একদিনের আন্তর্জাতিক গড় ষাট থেকে সাতান্নয় এসেছে, দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে সেই সময়ও প্রায় প্রতি দশ ম্যাচে একবার তিনি শতরানের কাছাকাছি পৌঁছেছেন কিন্তু শতরান করতে পারেননি যেটা করলেন সেদিন আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। ওই ৭৫/৮০ গুলোকে টেনে ১০০য় নিয়ে গেলেন। এর বেশি কিছু কি? অর্থাৎ শতরানটাই একমাত্র কাঙ্খিত সাফল্য নয়, সেটা আগের মতো কনভার্শন রেট থাকলে অনেক আগেই আসতো। দাপট, ধারাবাহিকতা কি ফিরল? তার উত্তর কিন্তু এই শতরান দিল না।
তাই স্বাগত শতরান, স্বাগত অপেক্ষার ৭১ কিন্তু ভারতীয় দলের বোধহয় অনেক অনেক বেশী করে দরকার ধারাবাহিক বিরাটকে। আশা রাখি দপ করে জ্বলে উঠে করা একটা শতরান নয়, কোহলি ফিরে আসুন রান মেশিন হয়ে, যেমন ছিলেন আগে, ‘বিরাট’ হয়ে।