খিদিরপুর স্পোর্টিং গতবছর খুব গুছিয়ে উঠতে পারেনি তাদের দল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ময়দানে জয়লাভ করেছিল বেশ কিছু ম্যাচে।
কিন্তু এইবছর যেন সম্পূর্ণ আলাদা হতে চলেছে চিত্রনাট্য। খাতায় কলমে অনেক ‘ইউটিলিটি’ খেলোয়াড় নিয়ে তৈরী হয়েছে খিদিরপুর দল। গতবছর শেষ মুহূর্তে কোচিং করানোর গুরুদায়িত্ব পেয়ে বেশ ভালো সামলেছিলেন রেলওয়েজ দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার রাহুল দেব। এইবছর কোচ আছেন তিনিই। এছাড়াও রয়েছেন অভিষেক ব্যানার্জী, সাত্যকি দত্ত, অভিজিৎ মন্ডল, রাহুল গুপ্ত, সুমন পাশি, ইকবাল উমর প্রমুখ একাধিক প্রতিভাশালী ক্রিকেটার।
টিম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন ময়দানের পরিচিত ক্রিকেটার অর্ণব নন্দী, মনোমিত মিত্র। দল সংগঠনের ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য ভূমিকা নিয়েছেন দেবীপ্রসন্ন পাধি।
দল নিয়ে কোচ রাহুল দেব বলছেন “আগের বছর চ্যালেঞ্জ অনেক বেশী ছিল। টিম খুব ভালো ছিলোনা। জুনিয়র ছেলে বেশী ছিল এবং বেশ কয়েকজন সেকেন্ড ডিভিশনের ছেলেকে আমরা অভিষেক করিয়েছি। এইদিক থেকে দেখলে এইবছর অর্ণব নন্দী, মনোমিত বেশ ভালো টিম করে দিয়েছে। একটা ছেলে যখন ফার্স্ট ডিভিশন থেকে সেকেন্ড ডিভিশনে খেলতে আসে তখন তাকে বুঝতে হবে যে খেলার স্ট্যান্ডার্ড কি? চাপ কেমন? এবার যাদের নেওয়া হয়েছে তারা অনেকদিন খেলছে তাই তারা প্রেসার নিতে জানে। আগেরবারের চ্যালেঞ্জ ছিল সেফ থাকার। এবার কিন্তু চ্যালেঞ্জ গ্রুপ ‘এ’ তে ওঠার।” রাহুল আরো বলেছেন “এইবছর আমাদের অনেক পরিণত টিম। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের সাথে কম্পিটিশন করতে গেলে চাপ নিতে জানতে হবে। যে টিম বেশী ফিট, সে ভালো খেলবেই।” এইবছর নিজের ক্যাম্পেই রাহুল শুরু করছেন দলের প্রি সিজন ক্যাম্প। রাহুল বলেন “কাগজ-কলমে দল অবশ্যই ভালো। সবাই পরীক্ষিত ক্রিকেটার। আমি যে পয়েন্ট লক্ষ্য হিসেবে দেখছি তা হলো যেন সিজন শেষে একজন বা দুজন রনজি ট্রফি স্কোয়াডে থাকে।” গতবছর খিদিরপুর দলে খেলা আকাশ দাস, সচিন কুমার সিং,বিশাল রায়চৌধুরীদের ভূয়সী প্রশংসা করলেন রাহুল।
এইবছর অধিনায়ক হয়েছেন ময়দানের ‘গোরা’ অর্থাৎ অভিষেক ব্যানার্জী। অভিষেক গতবছর খেলেছেন পুলিশ অ্যাথলেটিক ক্লাবে। অভিষেক কেন বদলে ফেললেন নিজের ক্লাব? যখন তার অধিনায়কত্বে পুলিশ এসি এতো ভালো খেলছে তখন কেন এই বদল? অভিষেক বললেন “খিদিরপুর জয়েন করার কারণ তারা চাইছে ‘এ’ গ্রুপে উঠতে। এছাড়া আমাদের কিছু ছেলে আছেন, এবং পাধি ভাই আছেন। ওরা চাইছে ভালোভাবে একটা টিম করতে চাইছেন। এছাড়া আমার কিছু ব্যক্তিগত অফিসের সমস্যার জন্য তিন দিনের ম্যাচে একটু সমস্যা হচ্ছিল আর টিম যেহেতু ভালো একটা মোটিভেশন পেলাম। অর্ণবও বলল আমাকে জয়েন করতে।” অভিষেক আরো বলেন “আমি আর অর্ণব চেষ্টা করেছি ‘ইউটিলিটি’ খেলোয়াড় বেশি নেওয়ার। তিন দিনের ম্যাচে ভালো খেলোয়াড়রা বেশি খেলতে চায়। তাই আমরা এমন ছেলে দেখছিলাম যারা মোটিভেটেড আছে আবার ‘ইউটিলিটি’ খেলোয়াড়ও আছে। সঙ্গে কিছু অর্থকরী ব্যাপার আছে। সব মিলিয়ে টিম আমার মনে হয় বেশ ভালোই হয়েছে।” দলের কোচ রাহুল দেবকে নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী অভিষেক। তিনি বললেন “রাহুলদা কোচ এবং ট্রেনার হিসেবে ভালো। তাই রাহুলদা কোচ হলে যথেষ্ট ভালো হবে বলেই মনে করি।”
ইকবাল উমর গতবছর ছিলেন ক্লাবের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী এবং তিনি এইবছর অনুর্ধ-২৩ স্কোয়াডেও রয়েছেন। বর্তমানে ইউটিলিটি ক্রিকেটার নিয়ে পরিপূর্ণ খিদিরপুর দল কেমন খেলে সেটাই দেখার।