আমরা এতদিন ধরে তাহলে ভুল জানতাম! “বয়স একটা সংখ্যা মাত্র। আসল কথা হচ্ছে পারফরম্যান্স।” এটা তাহলে নিতান্তই কথার কথা! নাহলে সম্মানীয় রাহুল শারদ দ্রাবিড় কেন দেশের সেরা উইকেট-কিপারকে আকারে ইঙ্গিতে অবসর নেবার পরামর্শ দেবার দুঃসাহস দেখাবেন! এ ব্যাপারে অন্ততঃ কারোর সন্দেহ নেই যে শুধুমাত্র উইকেট-রক্ষণ যদি যোগ্যতার মাপকাঠি হয়, তবে এখনও ঋদ্ধিমান সাহা ভারতের সেরা উইকেট-রক্ষক। হয়তো সারা পৃথিবীর!
আমি মনে করি এই সরল সত্যিটা মহামান্য রাহুল দ্রাবিড় জানেন। কিন্তু প্রশ্নটা হ’ল তাহলে তিনি অবসর নেবার পরামর্শ দিতে গেলেন কেন? তিনি কি সদ্য দলে ঢোকা ভরতের ক্যারিয়ারের ব্যাপারে হঠাৎ অতিরিক্ত সচেতন হয়ে উঠলেন? নাকি ভরত হঠাৎ ঋদ্ধিমানের চাইতেও ভাল কিপিং করতে শুরু করলেন?
আসলে কোনোটাই আসল সত্যি নয়। আসল কথাটা হ’ল আমরা যতই মুখে আমাদের ব্যাটিং লাইন আপ কে সেরা বলি না কেন, আসলে আমরা নিজেরাই সবচাইতে ভাল জানি যে এটা অনেকটাই মিথ্যা। তাই টেস্টেও আমরা বেশিরভাগ সময় এমন উইকেট-কিপার চেয়েছি, যিনি উইকেট-রক্ষকের কাজ মোটামুটি চালিয়ে দিলেও ব্যাটটা বেশি ভালো করতে পারেন। আর কে না জানে, ব্যাটসম্যান হিসেবে ঋদ্ধি, পন্থ বা ভরতের চাইতে পিছিয়ে থাকবেন, বর্তমান ফর্মের বিচারে।
অনেক বলেছেন যে ঋদ্ধিমান কথাটা বাইরে বলে ভুল করেছেন। আমি মানি না কথাটা। ঋদ্ধিমানের মানসিক অবস্থার কথাটা ভাবুন। সর্বক্ষণ তাঁকে বলা হচ্ছে যে তুমি দেশের সেরা উইকেট-কিপার। অথচ তোমাকে নিয়মিত খেলানো যাচ্ছে না। এ যে কি মানসিক যন্ত্রণা, কাকে বোঝাই! তাই একদম ঠিক করেছেন ঋদ্ধি সবটা প্রকাশ্যে এনে। তোমরা যদি আমাকে “your service is no longer required” বলতে পার, তবে আমিও তোমাদের ভাবমূর্তি রক্ষার দায় নেব না। ঠিক করেছেন ঋদ্ধিমান!
আর একটা ভাল কাজ হলো। অজাতশত্রু ভাবমূর্তির বাইরে এলেন রাহুল দ্রাবিড়! অবশ্য তাঁকে যতটা মহান হিসেবে সর্বভারতীয় প্রেস দেখাক না কেন, তিনি যে আসলে অতটা মহান নন, সেটা তাঁর অতীতের অপ্রকাশ্য থেকে করা কিছু কাজ তার সাক্ষ্য দেয়। সুতরাং একটা মুখোশ হয়ত দেরিতে হলেও খুলল। ধন্যবাদ ঋদ্ধি!
সবশেষে মাননীয় বোর্ড সভাপতি। এবার কিন্তু সময় হয়েছে নিজের দেওয়া কথা রাখার! আমরা জানি সবটা আপনার হাতে নেই। তবু একটা আপ্রাণ চেষ্টা যে সৌরভ করবেন, সেই বিশ্বাস রাখতেই পারি। শুধু একটা কথা মনে রাখবেন “Time is the best healer” কথাটা কিন্তু সবসময় সত্যি নয়! এবার সময় এসেছে। ঋদ্ধির পাশে থাকবার! এগিয়ে আসুন সৌরভ!