জুনমাসের জন্মদিনের যমজ: সামান্য কিছু কথা

বিশ্ব-ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে বিখ্যাত যমজ কারা? উত্তরটা খুবই সহজ – অস্ট্রেলীয় ওয় ভ্রাতৃদ্বয়, স্টিফেন রজার ওয় ও মার্ক এডওয়ার্ড ওয়। টেস্ট বা একদিনের ম্যাচ দু’ধরণের ম্যাচেই এঁদের সাফল্যের ধারেকাছেও নেই আর কোনও যমজ ক্রিকেটার। একবার চট করে দেখি তাঁদের মিলিত পারবারিক ক্রিকেটীয় সম্পদের সঞ্চয় কেমন।

টেস্ট:

৩৯৬ (১৬৮+১২৮) ম্যাচে মোট ১৮,৯৫৬ (১০,৯২৭+৮,০২৯) রান, ৫২টা (৩২+২০) শতরান, ৯৭টা (৫০+৪৭) অর্ধশতরান; ২৯৩টা (১১২+১৮১) ক্যাচ, ১৫১টা (৯২+৫৯) উইকেট, চারবার (তিন+এক) ইনিংসে-পাঁচ-উইকেট

ওডিআই:

৫৬৯ (৩২৫+২৪৪) ম্যাচে মোট ১৬,০৬৯ (৭,৫৬৯+৮,৫০০) রান, ২১টা (৩+১৮) শতরান, ৯৫টা (৪৫+৫০) অর্ধশতরান; ২১৯টা (১১১+১০৮) ক্যাচ, ২৮০টা (১৯৫+৮৫) উইকেট, একবার (শূন্য+এক) ইনিংসে-পাঁচ-উইকেট

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাড়ে-ন’শোরও বেশিসংখ্যক ম্যাচ খেলে এই দুই ভাই প্ঁয়ত্রিশ হাজারের বেশি রান করেছেন, পাঁচশোরও বেশি ক্যাচ ধরেছেন আর সোয়া-চারশোরও বেশি উইকেট নিয়েছেন – ৭৩টা সেঞ্চুরি (ডবল-সেঞ্চুরি একটাই, স্টিভের) এবং ১৯২টা হাফ-সেঞ্চুরি আছে। আর স্টিভের অধিনায়কত্বের কথাটা এযাত্রা বাদই থাক।

এই দুই অজি-ভাইকে নিয়ে সামান্য কয়েকটা তথ্য দিই। বিস্তারিত লিখতে গেলে একটা ছোটখাট বই হয়ে যাবে। 

  • স্টিভ মিনিট-চারেকের বড়, তাই মার্কের ডাকনাম ‘জুনিয়র’।
  • ছোটবেলায় দুজনেই ক্রিকেট ও ফুটবল দুইই খেলতেন সমানতালে, সিডনিতে।
  • দু’ভাইই কমবয়সে (ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি) মিডিয়াম-পেসও করতেন, কিন্তু পিঠের চোটের কারণে মার্ক অফ-স্পিন করা শুরু করেন।
  • যমজ ভাই হিসেবে সর্বপ্রথম টেস্ট-ক্রিকেট খেলেছেন। নিউজিল্যান্ডের হ্যামিশ ও জেমস মার্শাল পরে এসেছেন।
  • বিশ্বকাপজয়ী সর্বপ্রথম ও একমাত্র যমজ ভাই, ১৯৯৯ সালে। স্টিভ অবশ্য একবার বেশি জিতেছেন, ১৯৮৭ সালে। 
  • অস্ট্রেলিয়াতে ১৯৯০-৯১ মরশুমের অ্যাশেজ সিরিজে স্টিভের পরিবর্তে মার্ক টেস্ট-দলে আসেন এবং আবির্ভাবেই শতরান করেন।
  • দু’ভাইই তাঁদের – শেষ একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ [ফেব্রুয়ারি-২০০২, পার্থ, বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা], শেষ প্রথম-শ্রেণীর ম্যাচ [মার্চ-২০০৪, সিডনি, বনাম কুইন্সল্যান্ড] ও শেষ লিস্ট-এ ম্যাচ [ফেব্রুয়ারি-২০০৪, সিডনি, বনাম টাসমানিয়া] একই সঙ্গে খেলেন। এমন ভ্রাতৃত্ববোধের একতা ক্রিকেট-দুনিয়ায় বিরল। অবশ্য হয়ত অধিনায়কত্বের কারণেই স্টিভ [জানুয়ারি-২০০৪, সিডনি, বনাম ভারত] মার্কের [অক্টোবর-২০০২, শারজা, বনাম পাকিস্তান] থেকে প্রায় ১৫ মাস বেশিদিন টেস্ট খেলেন। 
  • ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে মার্ককে দুনিয়ার সেরা স্লিপ-ফিল্ডারদের একজন ব’লে গণ্য করা হয়, আর স্টিভ পয়েন্ট-গালি এইসব অঞ্চলেই বেশি দাঁড়াতেন।
  • ব্যাটিংয়ের ধরণে কিন্তু দু’জনের মধ্যে অনেকটাই পার্থক্য ছিল – স্টিভ ছিলেন ‘একগুঁয়ে খাড়ুস’ রান সংগ্রহকারী, আর মার্কের মতন শৈল্পিক ‘কব্জিমোচড়ের কবিতা’ খুব কম ব্যাটারেরই ছিল। 

এই যমজের জন্ম সিডনি শহরে ২রা জুন, ১৯৬৫ সালে।