ইডেনের প্রত্যাশা মিটল না ঋদ্ধি, শামিতে

আইপিএল প্লে-অফে কলকাতা নাইট রাইডার্স না থাকায় হা–হুতাশ অবশ্যই ছিল। নাইট অনুরাগীরা চেয়েছিলেন ‘‌ঘরের মাঠে’‌ শ্রেয়স আয়ার, আন্দ্রে রাসেলদের খেলা দেখতে। সে আশা পূরণ হয়নি। কিন্তু ঋদ্ধিমান সাহা, মহম্মদ শামিরা আসছেন জেনে অনেকেই রাতারাতি হয়ে গিয়েছিলেন গুজরাট টাইটান্সের সমর্থক। এই দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে কল্লোলিনীর আবেগ জানত গুজরাট টিম ম্যানেজমেন্টও। তাই মঙ্গলবারের ম্যাচের আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে তারা নিয়ে এসেছিল ঋদ্ধি, শামিকেই। রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে তাঁদের নিয়ে অনেক আশা ছিল ইডেনের। কিন্তু দু’‌জনেই হতাশ করলেন ক্রিকেটের নন্দনকাননকে। 

প্রথমে বল হাতে ৪ ওভারে ৪৩ রান দিয়েছেন শামি। নতুন বলে একেবারেই দাগ কাটতে পারলেন না এইমুহূর্তে ভারতীয় জোরে বোলিংয়ের অন্যতম সেরা অস্ত্র। শামিকে নিয়ে আশাভঙ্গ হলেও ইডেনের নজর ছিল ঋদ্ধির ব্যাটে। চার–ছয়ের বন্যায় তিনিই মাতিয়ে দেবেন গ্যালারি, আশায় বুক বেঁধেছিল ইডেন। এবারের আইপিএলে একাধিকবার বঙ্গ-কিপারের ব্যাট ঝলসে উঠেছে। অনেক অপমানের ‘‌জবাব’‌ দিয়েছেন ঋদ্ধি। গুজরাটকে শীর্ষে নিয়ে যেতে ঋদ্ধির অবদান যথেষ্ট। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে ভাল কিপিং এবং ব্যাট করেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আসন্ন টি২০ সিরিজে ভারতীয় দলে জায়গা হয়নি। সেই উপেক্ষিতই থেকে গেছেন। জাতীয় নির্বাচকরা আরও একবার বুঝিয়ে দিয়েছেন, জাতীয় দলের দরজা বন্ধই হয়ে গেছে ঋদ্ধির জন্য।

অথচ বারবার দেখাচ্ছেন তাঁর মধ্যে এখনও অনেক ক্রিকেট অবশিষ্ট আছে। অন্য দিকে তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করেই বাংলা রঞ্জি দলে ঋদ্ধিকে রেখেছেন নির্বাচকরা। অথচ শামির জন্য ছাড় আছে, বোর্ড অনুমতি দিলে তবেই তিনি খেলতে পারবেন বাংলার হয়ে। দু’‌জনের জন্য দু’‌রকম নিয়ম। ক্ষুব্ধ ঋদ্ধি জানিয়ে দিয়েছেন তিনি আর বাংলার জার্সি গায়ে চাপাতে চান না। বাংলা ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থার এক কর্তা ঋদ্ধি সম্পর্কে বিশ্রী এবং আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন আগেই। ঋদ্ধিকে এক সাংবাদিকের অপমান করা নিয়েও মুখ বন্ধ করেছিল সিএবি। এই আবহেই বাংলার ক্রিকেট অনুরাগীদের একটা বড় অংশ ঋদ্ধির পাশে দাঁড়িয়েছে। আশা ছিল ইডেনের বুকে অনেক বঞ্চনা, অপমানের জুতসই জবাব দেবেন ঋদ্ধি। কিন্তু পারলেন না সৌরভ গাঙ্গুলি, জয় শাহদের সামনে নিজেকে মেলে ধরতে। হয়তো বা প্রত্যাশার চাপ সামলাতে পারলেন না। ট্রেন্ট বোল্টের বলে ‘‌শূন্য’‌ হাতে ফিরে গেলেন। ঋদ্ধি যখন আউট হয়ে ফিরছেন, তাঁর থেকেও হতাশ দেখিয়েছে ইডেনকে।‌

তবে হ্যাঁ, দিনের শেষে কলকাতা খুশিও বটে। ঋদ্ধি, শামিদের দল ফাইনালে ওঠায়।