যদি ফিরে যান ছয় মাস আগের বাংলা এবং কর্ণাটকের মধ্যে হওয়া সৈয়দ মুস্তক আলী ট্রফির ম্যাচে তবে হয়তো মনে থাকবে একটা পরাক্রমী ৩৬ রানের ইনিংসকে।
পনেরো ওভার শেষে সেদিন বাংলার প্রয়োজন ছিলো বাকি পাঁচ ওভারে ৫২। ক্রিজে একমাত্র ব্যাটার হিসেবে ছিলেন ঋত্বিক রায়চৌধুরী। এছাড়া প্রদীপ্ত প্রামাণিক এবং আকাশদীপ থাকলেও সেই রান তাড়া করা তাঁদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব এটা বোঝা সহজ। ঋত্বিক যখন রান তাড়া করতে যান তখন কে. সি. ক্যারিয়াপ্পা ছাড়াও আরো একটি বড়ো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রদীপ্ত প্রামাণিকের মারা প্রতিটা বল ফিল্ডারের হাতে চলে যাওয়ায়। তবুও নিজের ইনিংসে চারটি বাউন্ডারি মেরে টার্গেট ছোট করে শেষ ওভারে তা কুড়ি রানে দাঁড় করানো ছিলো ঋত্বিকের কৃতিত্ব।
এরপর বিদ্যাধর পাটিলের করা শেষ ওভারের প্রথম দুটি বলকে ছয় মেরে লক্ষ্য বেশ ছোট করে আনেন ঋত্বিক। তার মধ্যে একটি ছয় ছিলো লেগ সাইডে আসা বলকে প্যাডল করে ফাইন লেগে পাঠিয়ে – যখন ৫ বলে ১৪ রান বাকি তখন ওইরকম শট সফলভাবে খেলা একজন পেস-হিটারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের গুণ না থাকলে সম্ভব হয়না এবং এখানেই সেদিন জিতেছিলেন ঋত্বিক।
চলতি জে. সি. মুখার্জী ট্রফিতে বড়িশা ক্লাবের অধিনায়কত্ব করছেন ঋত্বিক এবং ব্যাট হাতে ৩টি ইনিংসে ১৪৫ রান করে তিনি যে ফর্মের সপ্তমে রয়েছেন তার প্রমাণও দিয়েছেন। তিন নম্বরে ব্যাট করে ১৭২ স্ট্রাইক-রেট তাঁর উপযোগিতার অন্যতম নিদর্শন। গতকালের ম্যাচে ৩টি চার ও ছয়টি ছক্কা মেরে ঋত্বিক করেছেন ৪১ বলে ৭০ রান। একমাত্র ওয়াই. এম. সি. এ. ম্যাচে ওপেন করতে নেমে ৩০ রান করা ছাড়া সব ম্যাচেই সফল হন। জে. সি. মুখার্জী ট্রফির প্রথম ম্যাচে ৫টি ছক্কা ও ২টি চার মেরে ২৫ বলে ৪৫ রান করেন ঋত্বিক।
রঞ্জি ট্রফিতে সুদীপ চ্যাটার্জী ব্যর্থ হওয়ার পর তিন নম্বরে নেমে নতুন বল সামলানোর ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করেন ঋত্বিক। তিনি দেখিয়ে দেন অভিষেকে সাত নম্বরে নেমে গুজরাটের বিরুদ্ধে ৬৭ বলে ৫৩ রান করা তিনিই পারেন ১০০ বল খেলে বল পুরোনো করতে। এরপরে তো রয়েছেই টিটোয়েন্টি ক্রিকেটে ফিনিশারের জায়গায় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা। ডেথ ওভারে পেসের বিরুদ্ধে মাঠের চারদিকে শট নেওয়ার ক্ষমতা তাঁর সেই প্রতিষ্ঠা প্রাপ্তিতেও সাহায্য করেছে। এখন বাকি শুধু ৫০ ওভারের খেলায় নিজের কার্যকারিতা বৃদ্ধি। তা হলেই বাংলার মহামূল্যবান ক্রিকেটার হবেন ঋত্বিক। সেটা হতে আর কতইবা দেরি? খুব বেশি নয়।