হাতে লাঠি। যাতে ভর দিয়ে তিনি কোনওরকমে হাঁটতে পারেন। বাড়ির লোকেরা তাঁকে কিনে দিয়েছেন একটি হুইল-চেয়ার। মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরার সময় মানত করেছিলেন স্ত্রী অঞ্জু যে, বাড়ি ফিরতে পারলেই তাঁকে অমৃতসরে স্বর্ণ মন্দিরে নিয়ে গিয়ে ওখানকার হ্রদের পুণ্যজল মাথায় দেবেন। ৭৫ পেরনো বিষাণ সিং বেদি দিল্লির হয়ে খেললেও আদি বাড়ি এখনও রয়েছে অমৃতসরে। স্বর্ণ মন্দির তো অমৃতসরেই। তাই, অনেক দিন পর যেমন আদি বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে, তেমনি সপরিবারে পুজো দিতে গিয়েছিলেন স্বর্ণ মন্দিরে।
টেলিফোন নম্বর একই আছে। কিন্তু বিষাণকে সে নম্বরে কথা বলতে দেওয়া হয় না। টেলিফোন বাজতেই স্ত্রী অঞ্জু কথা বলেন এবং বুধবার তাঁর কাছ থেকেই জানলাম বিষাণ সম্পর্কে সাম্প্রতিকতম তথ্য। প্রতিদিন সন্ধেবেলা এখন বিষাণকে হুইল-চেয়ারে বসিয়ে স্বর্ণ মন্দির ঘোরানো হয়। পবিত্র জলাধারের পাশে বসে সবাই মিলে প্রার্থনা করেন। পুত্র বিশিষ্ট অভিনেতা অঙ্গদ ওখানে বসেই বিষাণের পা ধুয়ে দেন ওই জলাশয়ের জল দিয়ে। যেন গোটা পরিবারের পুনর্জন্ম হয়েছে। যত সুস্থ হয়ে উঠছেন বিষাণ, তত তিনি মাঠে ফেরার জন্য ছটফট করছেন। অমৃতসর পৌঁছেও তাঁর ছোটবেলার মাঠে সকালবেলা পৌঁছে যাচ্ছেন। সঙ্গী সেই হুইল-চেয়ার। এবং ওখানে বসেই শিক্ষার্থীদের জড়ো করে শুধু বাঁ-হাতি স্পিন বোলিং নয়, সামগ্রিকভাবে ক্রিকেটের নানা সূক্ষ্ম কৌশল শেখানোর চেষ্টা করছেন। অবাক লাগছে তো? এটাই কিন্তু বিষাণ সিং বেদি। কে বলবে ক’দিন আগেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন!