আইপিএল শুরুর আগে মোটামুটি নিশ্চিত ছিল ঋদ্ধিমান সাহা যদি কোনো দলের প্রথম একাদশে থাকেন তবে অবশ্যম্ভাবী ব্যাট হাতে ওপেন করবেন তিনি। কারণ? অন্য কোনো জায়গায় তাকে ব্যাট করালে পেসারদের বিরুদ্ধে কোথাও একটা জড়তা থেকে যায় তার।
কিন্তু জড়তা আসেনা একমাত্র একটি জায়গাতেই। যখন ফিল্ডাররা থাকেন তিরিশ গজ বৃত্তের মধ্যে- অর্থাৎ পাওয়ার-প্লের প্রথম ছয়টি ওভারে। তথ্য বলছে এই পাওয়ার-প্লেতেই ঋদ্ধিমান সাহার স্ট্রাইক রেট ১৩৪.২১। আরও জানা যায় যে পাওয়ার-প্লের মধ্যে অন্তত-৫০০-বল খেলা ব্যাটারদের মধ্যে স্ট্রাইক রেটের বিচারে সপ্তম স্থানে আছেন সাহা। তাঁর আগে থাকা ব্যাটাররা হলেন পৃথ্বী শ, জস বাটলার, ক্রিস লিন, বীরেন্দ্র শেহবাগ, সূর্যকুমার যাদব এবং ডেভিড ওয়ার্নার। অর্থাৎ উপরিউক্ত ছয়জন ব্যাটার টিটোয়েন্টি ক্রিকেটে পরিচিত অন্যতম বিস্ফোরক ব্যাটার হিসেবে। আরো চমকপ্রদ তথ্য ক্রিস গেইল (১৩৪.১৭) এবং অ্যাডাম গিলক্রিস্ট (১৩৪.০৭) টিটোয়েন্টির হার্ড-হিটিং এর অন্যতম বড়ো নাম হলেও তাঁরা পিছিয়ে ঋদ্ধিমানের থেকে।
এই মরশুমে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে ১৮ বলে ১১ রানের একটি কদর্য ইনিংস দিয়ে আইপিএল শুরু করেন ঋদ্ধিমান। তারপরে কেকেআরের বিরুদ্ধে উমেশ যাদবকে কয়েকটি অসাধারণ শট খেললেও কয়েকটি ডট বলে খেলা তাঁর স্ট্রাইক রেটকে উঠতে দেয়নি ১০০-র ওপরে। কিন্তু পরের সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ ম্যাচ থেকে যেন নবজীবন লাভ হয় তাঁর। শুরু থেকেই মার্কো ইয়ানসেন, থাঙ্গারাসু নটরাজনকে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে ইনিংস সাজানো শুরু করেন এবং উমরান মালিকের একটি ১৫৩ স্পিডে আসা ইয়র্কার তাঁর স্ট্যাম্প নড়িয়ে না দিলে ৩৮ বলে ৬৮ রানের অনবদ্য ইনিংস হয়তো তিন অঙ্কের কোটায় যেতেই পারতো। এরপরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে মহম্মদ সিরাজ, শাহবাজ আহমেদ এবং জস হ্যাজলউডকে বেশ কিছু বাউন্ডারি মেরে ২২ বলে ২৯ রানের একটি ইনিংস খেলেন ঋদ্ধি। শুভমান গিল যখন স্ট্রাইক রোটেশনে ব্যর্থ হচ্ছেন তখন ইনিংসটির মূল্য হয় অপরিসীম। এছাড়া গতকালের পাঞ্জাব ম্যাচে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে ১৭ বলে ২১ রান করেন তিনি যা ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
বর্তমানে আইপিএলে ৩০ গড় এবং ১২৯ স্ট্রাইক রেটে ১৫৪ রান করেছেন ঋদ্ধিমান এবং রাহুল তেওয়াটিয়া, রশিদ খান, ডেভিড মিলারদের পাশাপাশি হয়ে উঠেছেন গুজরাট দলের ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ। ডেভিড মিলার বলেন ” আমি ঋদ্ধিমানের সঙ্গে আগে দুই বছর পাঞ্জাব কিংস দলে খেলেছি। অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছি ও খুব ঠান্ডা মাথার খেলোয়াড়। গ্লাভস হাতে ও দুর্দান্ত এবং ব্যাটিংয়ের সময় ও পাওয়ার-প্লের সময় আমাদের ইনিংস ভালো শুরু করতে সাহায্য করে। ও আসার পরে আমরা পাওয়ার-প্লেতে ভালো শুরু পাচ্ছি। ও সবসময় কন্ট্রোলের মধ্যে থাকে এবং এটা টিমের জন্য বেশ ভালো। ও একজন নীরব আততায়ী।”
ম্যাথিউ ওয়েড পাঁচ ম্যাচে মোট সংগ্রহ করেন ৬৮ রান এবং এরপরেই সুযোগ আসে ঋদ্ধিমানের। ওয়েডের ব্যর্থতা শাপে বর হয়ে দেখা দিলো গুজরাট টাইটান্স দলের জন্য।