মিড অফ অঞ্চলে বল ঠেলে দৌড়োনোর প্রচেষ্টা করতে গিয়ে ঋষি ধাওয়ানের একটি অনবদ্য থ্রো শুভমান গিলের স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দিলে আগমন হয় তামিলনাড়ুর সাই সুদর্শনের।
উল্লেখ্য এই ইনিংসের আগে একটি ৩৫ ছাড়া আইপিএল-এ খুব বলার মতো ছিলোনা তাঁর। কিছু সময় পর কাগিসো রাবাদাকে একটি ছক্কা মারার পর আবার একই ভঙ্গিমায় লফ্ট করতে গিয়ে মিড-অফে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন ঋদ্ধিমান সাহা (২১)। এরপর নিজের প্রথম বল খেলেন সুদর্শন। প্রথম বলটিই ব্যাটের কানায় লেগে একটি বাউন্সে যায় প্রথম স্লিপে। ব্যক্তিগত ইনিংসের চতুর্থ বল থার্ড ম্যান দিয়ে দুই রান নিয়ে রানের খাতা খোলেন সাই। তাঁর অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ড্য যখন জিতেশ শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন মাত্র ১ রান করে তখন যেন বাড়তি দায়িত্বের তাঁর কাঁধে আসার বার্তা নিশ্চিত হলো। এরপর এলেন ডেভিড মিলার যিনি অন্যদিনের মতো লালিত্যময় ছিলেননা। মিলার যখন ১৪ বল খেলে ১১ করে ফিরে গিয়েছেন তখন উল্টোদিকে ২৪ বল খেলে একটাও বাউন্ডারি না মেরে ১৮ রান করেছেন সুদর্শন।
ঠিক এর দুই বল পরেই এলো তাঁর প্রথম বাউন্ডারি এবং ৪৮ বল পরে গুজরাট ইনিংসের একটি বাউন্ডারি। লিয়াম লিভিংস্টোনকে পুল করে থার্ড-ম্যান অঞ্চল দিয়ে প্রথম বাউন্ডারি মারেন সুদর্শন। এর পর আর ডট বল খেলেননি সুদর্শন। এক-দুই করে রানের খাতায় যোগ করার পাশাপাশি ঋষি ধাওয়ানকে লং-অন দিয়ে বাউন্ডারি মারেন তিনি। ঠিক এর পরের ওভারেই আবার রাহুল চাহারকে ডিপ মিড-উইকেটে পুল করে চার মারেন তিনি। এরপর অর্শদীপ সিংয়ের ওভারে একটি মিস-হিটের মাধ্যমে বাউন্ডারি পাওয়ার পরে পুল করে একটি ছয় মেরে নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করেন সুদর্শন। উল্লেখ্য এই ছক্কা মারার আগের ওভারে কাগিসো রাবাদা দুটি অসাধারণ বলে রাহুল তেওয়াটিয়া এবং রশিদ খানকে প্যাভিলিয়নের রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য করেছেন। যে দুজন ফিরেছেন তাঁরা প্রত্যেকেই বড়ো মাপের ম্যাচ উইনার হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন গুজরাটের জন্য এবং ১১২ রানের মধ্যে তাদের হারিয়ে ১৫০ পার করার রাস্তাও বেশ কন্টকময় হয়ে ওঠে গুজরাটের জন্য। এরপরও তারা যে ১৪৩ রানে পৌঁছতে পারলো তার একটা বড়ো কৃতিত্ব প্রাপ্য সুদর্শনের ৬৫ রানের।
এখনও পর্যন্ত গুজরাট দল ব্যাট হাতে ত্রাস হয়ে উঠেছে তার কারনগুলো দেখলে দেখা যাবে – ঋদ্ধিমান সাহার অসাধারণ পাওয়ার-প্লে ব্যাটিং, হার্দিক পাণ্ড্য, ডেভিড মিলারের মিডল ওভারের বীরত্ব এবং ডেথ ওভারে রাহুল তেওয়াটিয়া এবং রশিদ খানের অনবদ্য পেস-হিটিং। তাদের ব্যাটিং লাইন আপে একটি দুর্বলতার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তিন নম্বর স্থান। এই তিন নম্বরে বিজয় শঙ্কর ছিলেন সম্পূর্ণ ব্যর্থ, হার্দিক পাণ্ড্য আইপিএল কেরিয়ারে প্রথমবার পাওয়ার-প্লের মধ্যে তিন নম্বরে ব্যাট করে করেছিলেন ৮৭, কিন্তু তাঁর খেলার ধরণ সেই দায়িত্বে একেবারেই পড়েনা। সেই জায়গায় এসে আজ ৬৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে আশার আলো দেখালেন সুদর্শন। বিশেষত যখন সম্পূর্ণ দল হয়েছে ব্যর্থ এবং ওপেনার সাহা ছাড়া কারোর ১০০ বা তার বেশী স্ট্রাইক রেট নেই সেখানে ১৩০ স্ট্রাইক রেটে ৫টি বাউন্ডারিসহ ৬৫ খারাপ কোথায়? একজন ভারতীয় ব্যাটিং অ্যাঙ্কার তো সবসময় মূল্যবান যে কোনো দলের জন্য। ভরদ্বাজ সাই সুদর্শন কি সেই তিন নম্বরি সমস্যার সমাধান হবেন? সময় বলবে।