বিগত ২০১৯-২০ রঞ্জি মরশুমের কথা। অভিমন্যু ঈশ্বরণ, অভিষেক রমণের সঙ্গে বাংলার টপ-অর্ডারের দায়িত্ব পেয়ে প্রতি ম্যাচেই বাংলাকে বেশ জমাট শুরু করিয়ে দিচ্ছিলেন কৌশিক ঘোষ। কিন্তু কোনো একটা অজ্ঞাত কারণের জন্য প্রায় প্রতি ম্যাচেই ৪০-৪৫-এর ঘরে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসছিলেন তিনি। রাজস্থান ম্যাচ বাদে সম্পূর্ণ মরশুমে তাঁর কোনো হাফ-সেঞ্চুরি ছিলোনা। কোচ অরুণ লাল বলেছিলেন “তিন সেঞ্চুরি গ্রাউন্ড মে ফেক আয়া তুম।” কৌশিক ঘোষ নিজে এই সেঞ্চুরি ফেলে আসার কারণ ব্যাখ্যা করেছিলেন সাময়িক মনসংযোগের অভাব বলে।
হয়তো এই জন্যই বাংলার রঞ্জি ট্রফি দল থেকে বাদ পড়েন তিনি এবং সেই নিয়ে কথা বলার সময়ে গলায় ঝরে পড়েছিলো আক্ষেপের সুর। কিন্তু সিএবির লিগ ম্যাচ শুরু হওয়ার পরে অ্যাডামসের (কৌশিক ঘোষের ডাকনাম) ব্যাটে কিন্তু কোনো আক্ষেপের সুর নেই, বরং তা শোনাচ্ছে বেশ পরাক্রমশালী আগমনবার্তা। সুপার ডিভিশন লিগের প্রথম ম্যাচে ভালো শুরু না পেলেও পরবর্তীতে এরিয়ান ক্লাবের বিরুদ্ধে অসাধারণ ১৬৪ এবং মোহনবাগান দলের শক্তিশালী বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ৫৪৫ তাড়া করতে নেমে ১৭৬ এবং আজ কোয়ালিফায়ার চ্যাম্পিয়নশিপে রাজস্থান দলের বিরুদ্ধে মরশুমের প্রথম দ্বিশতরান (২১৮) করে কৌশিক ঘোষ বুঝিয়ে দিলেন তাঁকে বেশিদিন উপেক্ষা করা সম্ভব হবেনা। সব মিলিয়ে লিগে এখনও অবধি ৬৪৭ রান করে লাল বলের ক্রিকেটে নিজের শীর্ষস্থান লাভ করেছেন কৌশিক। কৌশিকের ২১৮ এবং অভিষেক রমণের সেঞ্চুরি (১০১) ভবানীপুরকে ৫১০ রানের পাহাড়ে পৌঁছে দিয়েছে। বর্তমানে রাজস্থান দল ১১৪-২।
অন্যদিকে গয়েশপুর মাঠে মোহনবাগান ক্লাব মুখোমুখি হয়েছিলো ইউনাইটেড ক্লাবের এবং আজ মোহনবাগানের প্রথম পাঁচ ব্যাটার করেন হাফ-সেঞ্চুরি। ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরণ (৮৫), প্রিনান দত্ত (৬৯), সুদীপ চ্যাটার্জী (১৭০), অরিন্দম ঘোষ (৬০) এবং অনুষ্টুপ মজুমদারের (৯৯) – প্রত্যেকেই পান হাফ-সেঞ্চুরি বা তার বেশী রান। সুদীপ চ্যাটার্জী দীর্ঘদিন লাল বলের খেলায় ফর্মের বাইরে ছিলেন এবং আজ একটি বড়ো ইনিংস খেলে নিজের ফিরে আসার প্রমাণ দিলেন তিনি। অনুষ্টুপ মজুমদার ছিলেন অনবদ্য তবে মাত্র একটি বলে ভুল করে আউট হন ৯৯ রানে। পরেরদিকে জয়জিৎ বসু (২১ বলে ৩১), বিবেক সিং (৩৩ বলে ৩০) এবং রাজকুমার পাল (১৪ বলে ১৮) ঝড়ের গতিতে রান তুলে মোহনবাগানকে ৬৩৫ রানে পৌঁছে দেন। জবাবে পার্থ পাহলোয়াতের হাফসেঞ্চুরির জোরে দিনের শেষে ১২৮-২ ইউনাইটেড। আগামীকাল ৮৭ ওভারে ৫০৭ রান দরকার তাদের।