রুটের ধাক্কায় ইংল্যান্ড বেসামাল

জো রুটের বদলে কে?

এটা নিয়েই এখন তোলপাড় ব্রিটিশ ক্রীড়ামহল। ফুটবল ওদেশের একনম্বর খেলা। রাগবি আছে তারপর। একটু পিছিয়ে ক্রিকেট। কিন্তু শেক্সপিয়ারের দেশ তাদের ক্রিকেট অধিনায়ককে অন্য চোখে দেখে। আভিজাত্যে মোড়া সেই চাহনি। তাই জো রুট চলে যাওয়ার পর যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, সেটা নিয়ে কিন্তু চর্চা চলছে বিস্তর। 

কে হবেন পরবর্তী অধিনায়ক? 

নিউজিল্যান্ড জাত বেন স্টোকসের কথা হওয়ায় ভাসছে। শরীর ভাল না, বাবার মৃত্যুর পর মন ভাল না – সব মিলিয়ে বেনকে ক্রিকেট মাঠে চেনা ছন্দে পাওয়া যাচ্ছে না। সেই অর্থে এই ইংল্যান্ড দলে আর কোন বড় নামও নেই। গোঁজ দেওয়ার পরিস্থিতিতে স্টোকসকে রাজি করিয়ে ফেলতে চাইছে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)।

অধিনায়ক যিনি হোন না কেন, দল কেমন হবে? ভাঙাচোরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারতে হয়েছে, এর চেয়ে বড় লজ্জার আর কি হতে পারে? সম্ভবত সেই কারণেই জো রুট অধিনায়কত্ব ছাড়লেন। নতুন তারকাদের মধ্যে লম্বা রেসের ঘোড়া হিসেবে কিন্তু কাউকে দেখা যাচ্ছে না। জিমি অ্যন্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রড এঁদের বয়স হয়েছে। ওঁদের সম্প্রতি বাদ দেওয়াও হয়েছে। তবে ফেরত নেওয়া হতে পারে দুজনকেই। ১,১০০ টেস্ট উইকেট ঝুলিতে রয়েছে যাঁদের, তাঁদের অন্তত এই সময়ের জন্য ফিরিয়ে আনা যায় না?

নতুন অধিনায়ক, নতুন কোচ, নতুন পরিবেশ – সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের অন্দরমহলে শান্তি নেই, স্বস্তি নেই। মনোবল সম্পূর্ণ তলানিতে। এই অবস্থায় একটা জোর ঝাঁকুনি দিতে হবে। সম্ভব? হোয়্যাই নট? দল নির্বাচনে স্বচ্ছতা আনা জরুরি। নতুন অধিনায়ককে স্বাধীনতা দিতে হবে। গেল-গেল রব তো অনেক তোলা হয়েছে, এবার বিলেত জুড়ে ইতিবাচক চিন্তা ভাবনায় মন দিতে হবে, কর্তাদের, ক্রিকেটারদের, সাপোর্ট স্টাফদের এবং অবশ্যই দর্শকদের।

ব্যর্থতার দায় এখন জো রুটের ঘাড়ে চাপানো যাবে না। বয়কট, অ্যাথার্টন, নাসের হুসেনদের টার্গেট করতে হবে এখন অন্য ইংল্যান্ড ক্রিকেটারদের। নেতৃত্বে থাকাকালীন চুটিয়ে রান করে গিয়েছেন রুট। অর্থাৎ নেতৃত্বের চাপ তাঁর মাথা, কাঁধ এবং ব্যাটে চাপ তৈরি করতে পারেনি। মুক্তমনে তিনি খেলতে পেরেছেন। এটুকু বলতেই পারি, ইংল্যান্ডকে যদি ভাল কিছু করতে হয় এই মরসুমে, তাহলে সকলকেই তাকিয়ে থাকতে হবে জো রুটের ব্যাটের দিকে। নেতৃত্বের দায়িত্ব ছাড়ার পরে মন খারাপ হতেই পারে, আর কে না জানে মন খারাপ নিয়ে ভাল কিছু করা যায় না। তাই ইসিবিকে দেখতে হবে জো রুট কিভাবে তাড়াতাড়ি ছন্দে ফিরে পান। রুট হাসলে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট মহলও হাসবে, রুট যদি কালো মুখ করে ঘুরতে থাকেন, তবে জোফ্রা আর্চারদের পক্ষে ধারাবাহিক ভাবে ইংল্যান্ডকে সাফল্যের আলোয় নিয়ে যাওয়া কঠিন। একপ্রকার অসম্ভবও বটে।