ধারাবাহিক ব্যর্থতাতেও প্রাপ্তি দুই বাঙালি কন্যা

কথায় বলে “মর্নিং শোজ দ্য ডে”। আজ ভারতীয় সময়ে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের দুরবস্থা দেখে অন্তত আলাদা কিছুই মনে হচ্ছিল না। সকালে যাস্তিকা ভাটিয়া, মিতালী রাজ এবং দীপ্তি শর্মা যখন এক অংকের রানে ফিরে গেলেন তখন মনে হচ্ছিলো ইংরেজি প্রবাদবাক্যকে সত্যি করে এই ১৩৪-ই তো নামের পাশে হওয়া উচিৎ।

ছবি : বিসিসিআই

অবশ্য ১৩৪ কেন? দলটির একসময়ের ভেঙ্গে পড়া তো ১০০ নিশ্চিত করতেও রীতিমতো প্রশ্নবোধক চিহ্ন বসিয়ে দিচ্ছিলো। ভাগ্যিস আজ একটা ‘বং কানেকশন’ ছিলো। নাহলে তো স্কোরবোর্ড আরো ধরাশায়ী দেখাতো ভারতকে।

শুরুতেই অ্যানা শ্রাবসোল গুরুত্বপূর্ণ ধাক্কা দেন ভারতকে। তার বলে যাস্তিকা ভাটিয়া (৮) বোল্ড হয়ে ফেরার কিছুক্ষনের মধ্যেই তার একটি ফুল লেংথ ডেলিভারি সামনের পায়ে খেলতে গিয়ে কভার-পয়েন্টে ক্যাচ দেন মিতালী রাজ (১)। যে ইংল্যান্ড দলকে একসময় গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ের জন্য নীচের সারিতেই ধরা হতো তাঁরা আজ করেন দুরন্ত ফিল্ডিং। দীপ্তি শর্মার (০) একটি অন ড্রাইভ দুর্দান্তভাবে ধরে ডাইরেক্ট থ্রোতে উইকেট ভেঙ্গে দেন কেট ক্রস।

কিছুটা হাল ধরেছিলেন আগের ম্যাচের দুই সেঞ্চুরিয়ান স্মৃতি মন্ধনা এবং হারমানপ্রীত কৌর। কিন্তু ইংল্যান্ড দলের অসাধারণ ফিল্ডিং যখন তাঁদের এক একটি নিশ্চিত চার আটকে দিচ্ছে তখন তাঁদেরও লাগছিলো বোতলবন্দী। এরপর ভারতের সমূহ বিপদ হয়ে দাঁড়ালেন শার্লট ডিন। অফস্টাম্প এর বাইরে পরপর ফ্লাইট করিয়ে ব্যাটসম্যানকে বারবার তিনি উদ্বুদ্ধ করছিলেন কভার অঞ্চলে খেলার জন্য এবং সেই ফাঁদে পা দিলেন হারমানপ্রীত (১৪)। ডিফেন্স করতে যাওয়ায় তাঁর ব্যাট ছোট্ট এজ নিয়ে চলে যায় কিপার অ্যামি জোন্স-এর হাতে। দুই বল বাদে ওরকমই একটা বল ড্রাইভ করতে গিয়ে আউট হন স্নেহ রানা (০)।

রিচা ঘোষ এই টুর্নামেন্টে বড়ো রান পাননি সেইভাবে। কিন্তু শুরু থেকে তার ইনিংসের শেষ অবধি বেশ জমাট ছিলেন তিনি। ভালো বলকে মেরিট অনুযায়ী খেলে এবং খারাপ বলকে বাউন্ডারিতে পাঁচবার পাঠিয়ে নিজের ইনিংস গুছিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। মনে রাখতে হবে এর মাঝে ফিরে গিয়েছেন টুর্নামেন্টে ভারতের সেরা ব্যাট স্মৃতি মন্ধনা (৩৫) এবং অন্যতম একজন হার্ডহিটার পূজা বস্ত্রাকর (৬)।

ঝুলন গোস্বামী আসার পরে দুই বাঙালি মেয়েকে লাগছিলো বেশ জমজমাট। ঝুলন রীতিমতো কিছু বড়ো শট মেরে মূল্যবান রান দিলেন ভারতকে এবং রিচা তো একটি বড়ো রান করবেন এই আশা করতেই পারতেন যে কোনো সমর্থক। কিন্তু আশা আর বাস্তবের মধ্যে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় একটি দুর্ভাগ্যজনক রানআউট। রিচার ইনিংসের পরিসমাপ্তি ৩৩ রানে না ঘটলে ভারত আরো বড়ো রানের স্বপ্ন দেখতেই পারতো।

ছবি : বিসিসিআই

দলগত ১২৩ রানের মাথায় রিচা ফিরে গেলে অল্পকিছুক্ষন বাদে ফেরেন ঝুলন (২০)। এরপর মেঘনা সিং ও রাজেশ্বরী গায়কোয়াড় তাড়াতাড়ি ফিরবেন এতে আশ্চর্য ছিলোনা এবং হলোও তাই।

আপাতত ইংল্যান্ড এর সামনে টার্গেট ১৩৫ রানের।