এক বর্ণময় কেরিয়ারের সমাপ্তি। বিদায় শ্রীসন্থ

মনে পড়ে ২০০৭ সেমিফাইনালের সেই ম্যাথিউ হেডেনের স্ট্যাম্প ছিটকে দেওয়া? বা ২০০৬ দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে আন্দ্রে নেলকে ছক্কা মেরে উল্লাসে ব্যাট ঘোরানো? মনে নিশ্চয়ই আছে সেই ভারতীয় বোলারকে। হ্যাঁ শান্তকুমারণ নায়ার শ্রীসন্থর কথাই বলছি।

ছবি : গুগল

বেশ কিছুটা দৌড়ে পপিং ক্রিজে এসে অদ্ভুত ভঙ্গিমায় হাত সঞ্চালন করে বল করতেন তিনি এবং তাতেই ভারত নয় নয় করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পেয়েছে ১৬৯টি উইকেট। কেরিয়ার ভাঙলে দেখা যাবে ৮৭টি উইকেট টেস্টে, ৭৫টি ওডিআইতে এবং ৭টি টিটোয়েন্টিতে। পরিসংখ্যান কখনোই তাঁকে খুব সফল বোলার না বললেও ভারতকে উল্লসিত হওয়ার মতো বেশ কিছু মুহূর্ত অচিরেই দিয়েছেন শ্রীসন্থ।

কেরিয়ার শুরু লেগ-স্পিনার হিসেবে এবং বেশিমাত্রায় ইয়র্কার দেওয়ার জন্য আস্তে আস্তে পেস বোলিং করা শুরু করেন তিনু জোহাননকে দেখে যিনি ছিলেন কেরালা থেকে টেস্ট ও ওয়ানডে খেলা একমাত্র ক্রিকেটার। এরপর ২০০২-০৩ মরশুমে কেরলের হয়ে গোয়ার বিরুদ্ধে অভিষেক ঘটান রঞ্জি ট্রফিতে। এরপর ভারত-এ দল খেলে ২০০৫ সালে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে ওডিআই অভিষেক, ২০০৬ সালে ইংল্যান্ড-এর বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক এবং ২০০৬ এর পয়লা ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের প্রথম টিটোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে টিটোয়েন্টি আন্তর্জাতিক অভিষেক।

২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারীর পরে তাঁকে টিটোয়েন্টি দলে ভারতের হয়ে আর দেখা যায়নি। ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল হয় তাঁর শেষ ওডিআই। এরপর ২০১১ ইংল্যান্ড সফরে একটি টেস্ট খেলেন।

ছবি : গুগল

আইপিএলে প্রথম তিন বছর কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেললেও পরে ২০১১ সালে কোচি টাস্কার্স কেরল এবং তারও পরে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে খেলেন। রাজস্থান দলের হয়ে খেলার সময় তিনি স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়েন, ফলে আজীবন ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত ঘোষিত হন। পরবর্তীকালে সেই শাস্তির মেয়াদ কমে ২০১৯ অবধি হওয়ায় ২০২০ সালে কেরল দলের সঙ্গে পুনরায় যুক্ত হন এবং ২০২২ রঞ্জি মরশুমে মেঘালয় দলের বিরুদ্ধে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিজের শেষ ম্যাচ খেলেন।

প্রথম-শ্রেণীর খেলায় ৭৪ ম্যাচে ২১৩টি উইকেট, ৯২টি লিস্ট-এ ম্যাচে ১২৪টি উইকেট তিনি পেয়েছেন। এছাড়াও ৬৫টি টিটোয়েন্টিতে ৫৪ উইকেট আছে তাঁর।

নিজের অবসর-সূচক টুইটার বিবৃতিতে শ্রীসন্থ বলেছেন “ক্রিকেট খেলোয়াড় হিসেবে ২৫ বছরের জীবনে আমি সবসময় সফলতা এবং ক্রিকেট ম্যাচ জয়ের জন্য ছুটেছি এবং প্রস্তুতি ও ট্রেনিং এর সময়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রতিযোগিতা, তীব্র আকাঙ্খা এবং অধ্যবসায় দিয়েছি।”

তিনি আরো বলেন যে পরবর্তী প্রজন্মের জন্যই ক্রিকেট থেকে অব্যহতি নেওয়া তাঁর।

আজ ভারতীয় ক্রিকেটে শান্তকুমারণ নায়ার শ্রীসন্থ অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটলো। অবসর নিলেন শ্রীসন্থ।