আর মাত্র দুটি দিন পর অর্থাৎ আগামী শনিবার আইপিএলের জন্য গুজরাট টাইটান্স ক্যাম্পে যুক্ত হবেন ঋদ্ধিমান সাহা। গত মরশুমের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন দল এবার রয়েছে মোটামুটি একইরকম, হয়েছে সামান্য কিছু পরিবর্তন। আইপিএল ক্যাম্প শুরুর দুইদিন আগে ফুরফুরে মেজাজে কালীঘাট ক্যাম্পে পাওয়া গেল গুজরাট ওপেনার ঋদ্ধিমান সাহাকে।
প্রশ্ন:- গতবছর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এই মরশুমে কিভাবে নিজের প্রস্তুতি নিয়েছ?
ঋদ্ধিমান:- প্রস্তুতি বলতে এখানে ক্যাম্পেই আমি মাঝে মাঝে প্র্যাক্টিস করে নিতাম। শেষ আইপিএল ক্যাম্পও আমি করেছি। ফিজিক্যাল ট্রেনিংও চলছে।
প্রশ্ন:- বাঁহাতি পেসারদের সামনে একটু যেন সমস্যা হচ্ছিল। এবার কিভাবে তৈরী হয়েছ সেই সমস্যার জন্য?
ঋদ্ধিমান:- সেইরকম কিছু নয়। হয়তো প্রথম দুটি ওভার আমি চান্স নিইনা এবং তারপরে পাওয়ারপ্লেতে চান্স নিই। যেহেতু আমি সেই দুটো ওভার চেষ্টা করিনা, স্কোরিং অপসন কম থাকে।
প্রশ্ন:- বেশ কিছু বছর কোনো বড়ো টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ তোমার ভালো হয়না। কেন এটা হয়?
ঋদ্ধিমান:- এটা একদমই ঠিক ধরেছো। এটা হয়না। সব আইপিএলে নয়, তবে আমার মনে হয় প্র্যাক্টিস থেকে ম্যাচে গেলে সেই কন্ডিশন, সেই পেস/বাউন্স সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে একটু। এটাই আমার মনে হয় কারণ।
প্রশ্ন:- এইবছর ত্রিপুরার হয়ে অভিজ্ঞতা কেমন?
ঋদ্ধিমান:- আমি পারফরমেন্স নিয়ে খুশি। টিটোয়েন্টি আরো ভালো হতে পারতো, তবে রনজি ট্রফিতে ভালো ভালো টিমের বিরুদ্ধে আমরা তিন পয়েন্ট নিয়েছি। পুরো খেলা অনেক ম্যাচে হয়নি, হলে হয়তো আরো ভালো রেজাল্ট হতো।
প্রশ্ন:- এর আগে কখনো পুরো ডোমেস্টিক সিজন অধিনায়কত্ব করতে হয়নি। এইবার চ্যালেঞ্জটা কিরকম ছিল?
ঋদ্ধিমান:- এর আগে আমি অধিনায়কত্ব করিনি। এইবার চ্যালেঞ্জ অন্যরকম ছিল কারণ ওরা আমাকে বলেছিল যে মেন্টর কাম প্লেয়ার হিসেবে ওদের সঙ্গে থাকতে। ওদের সাহায্য করা একটা বড়ো কাজ ছিল। একজন সিনিয়র খেলোয়াড় থাকলে তাঁর অভিজ্ঞতা সবাই চায়। বেঙ্গলে হয়তো কিছু সমস্যার জন্য আমি করিনি অধিনায়কত্ব, কিন্তু ত্রিপুরা অনেকটা প্রাধান্য দিয়েছে।
প্রশ্ন:- তুমি স্পিন এতো ভালো খেলো। এটা কি কিপার হিসেবে এতো কিপিং করার ফল?
ঋদ্ধিমান:- অবশ্যই। পেস বা স্পিন বলো, স্পিনারদের ক্ষেত্রে অনেকটা ক্লোস থেকে বল ফলো করতে হয়, বল রিড করতে হয়। এটা খুব সাহায্য করে ব্যাটিংয়ের সময়।
প্রশ্ন:- গুজরাট দল অনেকটাই এক। কেন উইলিয়ামসনের আসা কতটা সাহায্য করবে?
ঋদ্ধিমান:- কেন একজন দুর্দান্ত খেলোয়াড়। শেষ টেস্ট দারুনভাবে জিতিয়েছে। এছাড়াও আয়ারল্যান্ড দলের একজন খেলোয়াড় আছে, ওডেন স্মিথ আছে। ক্যাম্প শুরু হলে আমার মনে হয় কম্বিনেশন ভালো তৈরী হবে।
প্রশ্ন:- গ্যারি কাস্টেনের সঙ্গে তোমার বোঝাপড়া বেশ ভালো। কি বলবে?
ঋদ্ধিমান:- কার্স্টেনের সঙ্গে আমার অনেকদিন কথা হতো, সেই যখন আমি ইন্ডিয়া টিমে ছিলাম তখন থেকেই। আমি কোন শট ভালো খেলি, কি ভালো করতে পারি সব নিয়েই কথা হতো। যখন আছে তখন ভালো হবে অবশ্যই।
প্রশ্ন:- তোমার রোলটা হয়তো পাওয়ারপ্লেতে বেশি। কি বলবে?
ঋদ্ধিমান:- আমার থেকে যদি বেশী পেতে হয় তবে হয়তো ওটাই আমার সবচেয়ে ভালো জায়গা। হয়তো আমি মিডল ওভারে খেলতে পারি, তবে হার্দিকের মতো হিটিং বা রাশিদের মতো শট আমার নেই।
প্রশ্ন:- এইবছর অনেক পুলশট বেশী খেলেছো। এর ওপর জোর দিলে কেন?
ঋদ্ধিমান:- আমি সামনের পায়ে ভালো শট খেলি ব্যাকফুটের তুলনায়। যদি কোনো টিম আমার বিরুদ্ধে বল করতে চায় তবে নিশ্চিতভাবে একটু পেছনে বল করবে। সুতরাং পেছনের পায়ে শট খেলা প্র্যাক্টিস করাই ভালো।
প্রশ্ন:- তাড়াতাড়ি আউট হয়ে ফিরে গেলে কিভাবে নিজেকে সামলে রাখো?
ঋদ্ধিমান:- আমি মাঠ থেকে ফিরে এলে খেলা নিয়ে আর ভাবিনা কখনো। ছোট থেকে আমি ১০০ করলে যেমন থাকি, ০ করলেও তেমন থাকি। কারণ খেলার জীবনের সঙ্গে বাকি জীবন মিশিয়ে ফেললে সেটা খুব প্রভাব ফেলে সবকিছুতে।
প্রশ্ন:- বছরের বড়ো সময় বাড়ির বাইরে থাকা। পরিবারের সদস্যদের কতটা মিস করো?
ঋদ্ধিমান:- আমার হয়তো অনেক বছর বাড়ির বাইরে থেকে অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। তবে বাড়ির বাচ্চারা, স্ত্রী- সবাই খুব মিস করে এটা ঠিক। খারাপ লাগে অবশ্যই। এটা করেই এতদিন চলে আসছে, পরিবার জানে এবং আমাদেরও মানতে হয়।
প্রশ্ন:- অল দ্য বেস্ট।
ঋদ্ধিমান:- ধন্যবাদ।