“গত পাঁচ বছরে ক্রিকেট ডার্বির উন্মাদনার মাত্রা একেবারেই কমে গিয়েছে।”- অর্ণব নন্দী


সদ্য ইস্টবেঙ্গলকে ফলো-অন করিয়ে সুপার লিগের ক্রিকেট ডার্বি জিতেছে মোহনবাগান দল। প্রিনান দত্ত মোহনবাগানের হয়ে করেছেন ৯৯, পেয়েছেন ম্যাচের সেরার পুরস্কারও। ইস্টবেঙ্গল দলের হয়ে আকাশ পান্ডে নিয়েছেন ৬ উইকেট, সায়ন শেখর মন্ডল প্রথম ইনিংসে ৭০ রান করার পরে ফলো অন করে দ্বিতীয় ইনিংসে করেছেন ১০০টা রান। এত সত্ত্বেও যেটা বদলেছে তা হলো মাঠে দর্শকের উপস্থিতি। বাংলা দলের সিলেক্টর এবং কোচ ও অশোক দিন্দার মতো প্রাক্তন ক্রিকেটার ছাড়াও রয়েছেন এক একনিষ্ঠ মোহনবাগান সমর্থক এবং ছবি তোলার জন্য আছেন সিএবি ফটোগ্রাফার।
এই লোকস্বল্পতা নিয়েই রীতিমতো সরব মোহনবাগান অধিনায়ক অর্ণব নন্দী। অর্ণববাবু বলেন “ইস্টবেঙ্গল খেলাকালীন আজ থেকে পাঁচ-দশ বছর আগে যে উন্মাদনা কলকাতা ডার্বিতে ছিল, সেই উন্মাদনার ‘উ’টাও চোখে পড়ে না। যখন আমাদের সই পর্ব চলত তখন কে কোন ক্লাবে সই করলো সেই নিয়ে একটা আগ্রহ থাকতো, লোকের কাছে হয়তো সেই খবর পৌঁছয় না বা পৌঁছতে দেওয়া হয়না।” অর্ণব আরো বলেন “আগে সংবাদপত্রগুলো কলকাতা ক্লাব ক্রিকেটের খবর ছাপত, এখনকার দিনে কোনো প্লেয়ারের পারফরমেন্স হেডলাইন হয়না। এটা খুব দৃষ্টিকটু ব্যাপার। এটা একজন খেলোয়াড়কে মাইলেজ দিত, কিন্তু এখন একটা টুকরো খবরও ছাপা হয়না।”


অর্ণব মনে করেন সিএবির উচিৎ এগিয়ে আসা, যেহেতু ক্লাব ক্রিকেট একটা প্ল্যাটফর্ম। তিনি বললেন ” আগে প্রেস ক্লাবে গিয়ে স্কোরাররা স্কোর দিয়ে আসতেন, এখন সেই প্রথা উঠে গিয়ে অনলাইন স্কোরিং শুরু হয়েছে। তাও কোনো পরিবর্তন নেই।”
চলতি বছরের প্রথম কলকাতা ক্রিকেট ডার্বিতে মোহনবাগান প্রথম ইনিংসে ১৫৬ রানের লিড নিয়ে ৭-৩ পয়েন্টের ব্যবধানে পরাজিত করেছে চিরপ্রতিদ্বন্ধী ইস্টবেঙ্গলকে। প্রথমে ব্যাট করে প্রিনান দত্তর ৯৯ এবং অরিন্দম ঘোষের ৬১ রানের সুবাদে বোর্ডে ৩৮১ রান তোলে মোহনবাগান। আকাশ পান্ডে নেন ৬টি উইকেট।


জবাবে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং ধ্বসের সম্মুখীন হয় লাল-হলুদ। একে একেবারে ব্যর্থতার মিছিলে সামিল হন প্রসেনজিৎ দাস, দিগন্ত নিয়োগী, মহম্মদ আরিফ আনসারীরা। সায়ন শেখর মন্ডল(৭০) এবং আকাশ ঘটক(৫৫*) না থাকলে হয়তো লিড আরো বড়ো হতে পারতো। তাঁদের ইনিংস শেষ হয় ২২৫ রানে। অয়ন ভট্টাচাৰ্য এবং রাজকুমার পাল নেন ৩টি করে উইকেট।
ফলো-অন করতে নেমে প্রসেনজিৎ দাস এবং আরিফ আনসারী অল্প রানের ফিরে গেলেও সায়ন শেখর মন্ডল এবং সহদেব বড়ো রান করেন। দিনের শেষে যখন মাত্র ২ ওভার বাকি, তখন সায়নের সেঞ্চুরি হতে বাকি ছিল মাত্র ৬টি রান। অয়ন ভট্টাচাৰ্যর প্রথম চারটি বল মিস করার পরে পঞ্চম বলটি মিডউইকেট অঞ্চল দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সায়ন। যদিও তারপরের বলেই অয়নের একটি নীচু হয়ে আসা বল সায়নের প্যাড পেতেই আম্পায়ার আঙ্গুল তুলে লেগ বিফোরের সিদ্ধান্ত দেন। ইস্টবেঙ্গল দিন শেষ করে ১৭৫ রানে ৩টি উইকেট হারিয়ে।