১৯৯৭ সালের জুলাই মাসের শুরুতে ময়দানের রিজার্ভ ব্যাংক তাঁবুতে একজন কর্মী হিসেবে নিযুক্ত হন দামোদর বারিক। এরপর কেটে গিয়েছে প্রায় পঁচিশ বছর। শুধু ক্লাবের মালি হিসেবেই নয় বরং এছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ক্লাবের পাশে থেকেছেন এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন দামোদর।
কিন্তু বিগত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ৬৪ বছর বয়সী দামোদর একটি চিঠি মারফত রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া এমপ্লয়ী স্পোর্টস ক্লাবের কাছে নিজের স্বেচ্ছাবসর দাবি করেন। তার বয়স এবং অন্যান্য কিছু ব্যাপার বিবেচনা করে চলতি বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ১লা এপ্রিল রিজার্ভ ব্যাংক এমপ্লয়ী স্পোর্টস ক্লাব তার অবসরকে শিলমোহর দেয়।
আজ ২৬ সেপ্টেম্বর, ক্লাবের তাঁবুতে দামোদর বারিকের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল একটি সংবর্ধনা সভার। সেই সভা মারফত দামোদর বারিককে আর্থিক সাহায্য রূপে বিভিন্নভাবে ৮ লক্ষ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা তুলে দেওয়া হয় এবং সঙ্গে ছিল আরো বহুবিধ উপহার। উপস্থিত ছিলেন সর্বভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক এমপ্লয়ী এসোসিয়েশনের সভাপতি সমীর ঘোষ, রিজার্ভ ব্যাংক স্পোর্টস ক্লাবের সহসভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, রিজার্ভ ব্যাংক এমপ্লয়ী এসোসিয়েশন কলকাতার সেক্রেটারি শ্রীমন্ত মিত্র। খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিলেন ময়দানের বিশিষ্ট কোচ আব্দুল মোনায়েম এবং প্রাক্তন ক্রিকেটার সত্যেন্দ্র সিং।
সেক্রেটারি সমীর ঘোষের মুখেও ঝড়ে পড়ছিল দামোদর বারিকের সুখস্মৃতি। সমীর ঘোষ বললেন এটি তাঁদের কাছে অবশ্যই গর্বের যে সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকা কর্মীরা প্রত্যেকে অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের প্রত্যেকের মিলিত প্রচেষ্টাতেই এতো বড়ো উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়েছে। স্মৃতিচারণে আব্দুল মোনায়েম বললেন “আমরা যখন জয়পুরে খেলতে গিয়েছি একটি সর্বভারতীয় টুর্নামেন্ট সেইখানে একা সবার রান্না করতো দামুদা(দামোদর বারিক), এর ফলে দলের সবার মধ্যে বোঝাপড়া শক্ত হয় অনেকটাই। একবার আমার ব্যাগ ট্রেনের বাঙ্কার থেকে পড়ে গিয়েছিল ভেবে আমি ওনাকে তুমুল বকাবকি করি। পরে দেখা গিয়েছিল যে ব্যাগটা পড়েইনি। দামুদা কোনো কথা বলেনি সেইদিন।”
যাকে ঘিরে এতো আয়োজন সেই স্বল্পভাষী দামুদা অর্থাৎ দামোদর বারিক শুধু বললেন “আপনারা আমার জন্য এতো আয়োজন করেছেন আমার খুব ভালো লাগছে।”
একজন বয়স্য মালির অবসরের কারণে এবং তার অবসর পরবর্তী জীবনের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য রিজার্ভ ব্যাংক এমপ্লয়ী অর্গ্যানাইজেশন অবশ্যই কৃতিত্ব এবং বাহবা- উভয়েই দাবি করে।