প্রথমে তন্ময় প্রামানিকের তন্ময় ব্যাটিং এবং পরবর্তীতে কামাল হাসান মন্ডলের কামাল করা সেঞ্চুরি – সব মিলিয়ে কালীঘাট মাঠে ইস্টার্ন রেলওয়ে এবং ওয়ারির ম্যাচ জমে উঠেছিল বেশ ঘটনাবহুলভাবেই।
প্রথমে ব্যাট করে ওপেনার দেবেন্দ্র সিং এবং উত্তম রায়চৌধুরীর দাপুটে দেড়শো রানের ওপেনিং পার্টনারশিপ বেশ ভালো জায়গায় পৌঁছে দেয় রেল দলকে। এরপর ইনিংসের হাল ধরেন অমৃতেন্দু ঘোষ (৪২), অধিনায়ক পঙ্কজ সাউ (৫৭)। পাঁচ নম্বরে নামা তন্ময় প্রামাণিক ৭টি চার ও ৮টি ছয় মেরে ১৩৬ বলে ১৩১ রান করে যান। এছাড়া অনুপ সমাদ্দার (২৫), প্রিয়ম সরকার (৩১), সৈকত দাস (২৯) ছিলেন বেশ উজ্জ্বল। ওয়ারি দলের তুষার মন্ডল ৪টি, আদিম সাহেব এবং সুনীল দালাল ৩টি করে উইকেট নেন। রেল শেষ করে ৫৩৬ রান।
এরপর ওয়ারি ব্যাট করতে নামলে প্রতিপক্ষ বোলারদের সামনে ধরাশায়ী হয়ে পড়েন তাদের ব্যাটসম্যানরা। চারে নামা সুনীল দালাল একটু প্রতিরোধ শুরু করেন ৫৮ রানের ইনিংস দিয়ে। এরপর অধিনায়ক কামাল হাসান মন্ডল খেলতে শুরু করেন নিজের অসাধারণ খেলা। একটাই সমস্যা ছিলো সঙ্গীর অভাব। ইউসুফ চিস্তি (৩৫), সৌম্যদীপ পোদ্দার (৬), অঞ্জন সাহা (১৭) – কেউই খুব ভালোভাবে সঙ্গ দিতে পারেননি। শুধু দশম ব্যাটসম্যান তুষার মন্ডল (১১৯ বলে ২১) দুর্দান্ত প্রতিরোধ করেন রেল বোলারদের। কামাল হাসান মন্ডলের ১৪৫ রানের ইনিংস ছিল যেমন প্রতিরোধপূর্ণ, তেমনই আক্রমণাত্মকও। ইস্টার্ন রেল দলের রাজু হালদার ৩টি, নিখিল সিং ২টি এবং সৌম্যরূপ মন্ডল ২টি করে উইকেট নেন।
ম্যাচের শেষে ধরা দিলেন ইস্টার্ন রেল অধিনায়ক পঙ্কজ সাউ।
প্রশ্ন:- কি মনে হয়? কোনটা টার্নিং পয়েন্ট?
পঙ্কজ:- টার্নিং পয়েন্ট সত্যি বলতে নেই। শুরু থেকেই আমাদের ব্যাটাররা এবং বোলাররা অসাধারণ খেলেছে এবং অসুবিধা একটাই ছিলো যে মাঝে মাঝে ছন্দ হারানো। সেটাও খুব ভালো মেক-আপ হয়েছে। কোথাও গিয়ে পার্টনারশিপ সময়মতো ভাঙতে পারাই টার্নিং পয়েন্ট।
প্রশ্ন:- ইস্টার্ন রেল প্রতিটা ম্যাচ জিতছে, এবার হয়তো গ্রুপ-এ-তেও খেলবে। কিভাবে প্র্যাক্টিস করো তোমরা?
পঙ্কজ:- ক্রিকেট হলো টিম-গেম। টিমে যদি ডিসিপ্লিন, বন্ডিং ভালো থাকে তবে সেই রেজাল্ট মাঠে গিয়ে হয়। আমাদের এতো ভালো খেলার কারণ একটাই এবং তা হলো প্লেয়ারদের ডিসিপ্লিন, সিরিয়াসনেস – সব নিয়ে ওভারঅল আমাদের ভালো হচ্ছে। টিমের খেলোয়াড়দের কোনো প্ল্যান দিলে তারা সেইভাবেই ব্যাট, বল করছে। সব কিছু ঠিক চলছে বলেই সো ফার এতো ভালো খেলছি।
প্রশ্ন:- যখন নবম উইকেট পড়ছিলো না, পার্টনারশীপ ৩০ ওভারের ওপর চলছিল। কামালদা ফর্মে ছিলো এবং মেরে রান তাড়া করে দিতে পারতো। তখন প্যানিক হওয়ার সুযোগ ছিলো এবং এখানে বোলারদের কি বলছিলে?
পঙ্কজ:- একটা টাইম ২৬ ওভারে ১৭৬ মতো বাকি ছিলো, কিন্তু জানতাম যে একটা উইকেট পড়ে গেলে আর রান করতে পারবেনা। আফটার লাঞ্চ, আমি বলেছিলাম স্কোরিং শট বন্ধ করতে যেটা লাঞ্চের আগে আমরা পারিনি। ওইটা বন্ধ করতে পারলে হবে। আমি বলেছিলাম এক দুই হোক, ছয় বলে ছয় হোক তবে চার যেন না খেলে। সিঙ্গল নিলে বডি এক্সহস্ট হয়, মারতে গিয়ে এদিক-ওদিক হয়, যেটা হলো। প্ল্যানটা একটু চেঞ্জ করেছিলাম এখানেই।
প্রশ্ন:- এতটা গরম কতটা চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে প্লেয়ারদের?
পঙ্কজ:- নিশ্চয়। দেখ, ভালো ক্রিকেট খেলতে গেলে গরমকালে খেলতেই হবে। আমিও ছোট থেকে খেলছি এবং জানি শীতকালে তুমি যাই পারফরমেন্স কর, গরমের ক্রিকেট মেইন। এখানে যে ভালো খেলবে সেই এগোবে। এটাই আরো ইম্পর্ট্যান্ট কারণ এরপর নক-আউট খেলা শুরু হয় এবং ওখানে সব ভালো প্লেয়ার থাকে, ভালো উইকেট, মাঠ সব থাকে। ওইজন্য এখানে যে ভালো করবে সে সিলেকশনের দিকে এগোবে।
পুনশ্চ:- অন্য কোয়ালিফায়ার ম্যাচে কালীঘাট নয় উইকেটে হারিয়েছে খিদিরপুরকে।