দীর্ঘদিন ধরে ছিলেন অফ ফর্মে। গত বছর রনজি ট্রফিতে ঝাড়খন্ড ম্যাচে বোলিং অতটা ভালো না হওয়ায় মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল ম্যাচে জায়গাই হয়নি প্রথম একাদশে।
শুধু এখানেই শেষ নয়। মুস্তাক আলী ট্রফিতে গুটিবসন্তের কারণে খেলতে না পারার পরে অজানা কারণে বিজয় হাজারে ট্রফি থেকেও ছিলেন বাদ।
এরপর ফিরে আসার জায়গা ছিল ক্লাব ক্রিকেট। সেখানে প্রথম ম্যাচে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে প্রথম স্পেলে চূড়ান্ত খারাপ বল করার পরে উইকেট পেলেও, পুরোনো ঈশান যেন কিছুতেই ফিরছিলেন না। কালীঘাট ম্যাচে উইকেট পাওয়ার পরেও না।
কিন্তু পরিচিত ইডেন গার্ডেন্স, পরিচিত সকালের হাওয়া এবং হাতে লাল বল- এই অনবদ্য সমন্বয়ের সঙ্গে নিজের স্কিল মিশিয়ে যেন সেই পুরোনো ভিন্টেজ ঈশান হিসেবে দেখা দিলেন ঈশান পোড়েল।
২৯ রানে লিড খরচ করার পর যখন সবে একটা চার মেরেছেন উত্তরপ্রদেশ ওপেনার অঞ্জন্য সূর্যবংশী, তখনই একটি বল নিখুঁতভাবে ভেতরে এনে তার ডিফেন্স ও স্ট্যাম্প একসাথে ভেঙে দিলেন ঈশান। এরপর প্রিয়ম গর্গের প্যাডে বল ছিটকে দিয়ে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তোলেন ঈশান।
এর আগে প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। প্রথম দিন শুরুর উইকেট সকালের ব্যাটিং অনুপযোগী পরিস্থিতিতে হলেও দুপুরের সেশনে যখন রিঙ্কু সিং এবং প্রিয়ম গর্গ মোটামুটি চড়ে বসছেন বাংলার বোলারদের ওপর, তখন একদিক থেকে পরপর প্রিয়ম গর্গ এবং আরাধ্য যাদবকে ফিরিয়ে উত্তরপ্রদেশকে চাপে রাখেন ঈশান। যদিও অন্যদিকে প্রীতম চক্রবর্তী ছিলেন, তবুও ঈশানের তোলা উইকেটের নামের ভারই তাকে করে আলাদা। মাধব কৌশিক-প্রিয়ম গর্গ-করণ শর্মা-আকাশদীপ নাথ এবং আরাধ্য যাদবের মধ্যে কেউ একজন বড়ো রান করলেই আজ উত্তরপ্রদেশ অনেকটা চাপে রাখতো বাংলাকে।
যদিও ব্যাটিং ব্যর্থতায় আজ বাংলা লিড খুইয়েছে ২৯ রানের এবং দ্বিতীয় দিনের শেষ একটি ঘন্টা রিঙ্কু-আকাশদীপ নাথ জুটি খারাপ বল বাউন্ডারিতে খেলে আজ উত্তরপ্রদেশকে এগিয়ে দিয়েছেন প্রায় ১৫১ রানে, তবুও কাল সকালে যদি পুরোনো ঈশান-আকাশ জুটি এবং পরিবর্ত বোলার হিসেবে প্রীতম চক্রবর্তী দাপট দেখান তবে হয়তো ২৫০ রানের কমে ঠেকানো যাবে লিড।
অবশ্য তাতেও খুব সুবিধা কি করতে পারবেন বাংলার ব্যাটাররা? সবুজাভ উইকেটে শিবম মাভি-অঙ্কিত রাজপূত জুটির সামনে চতুর্থ ইনিংসে কতটা সুবিধা করতে পারেন অভিষেক দাস-কৌশিক ঘোষ-সুদীপ কুমার ঘরামি, তার ওপর বাংলার ভাগ্য নির্ভর করবে অনেকটাই।