জানুয়ারি ১৮, ১৯৭২। বোম্বেতে জন্ম ১৯৯২-৯৩ থেকে ১৯৯৫-৯৬ পর্বে ১৭ টেস্ট খেলা ন্যাটা মিডল-অর্ডার ব্যাটার বিনোদ কাম্বলির। শচীন তেন্ডুলকরের অতি প্রতিভাবান যে মুম্বইকর সতীর্থ কোনওদিনই সুবিচার করতে পারেননি নিজের সার্বিক দক্ষতার প্রতি। এবং তৎসত্ত্বেও অন্তত বিশ টেস্ট ইনিংসে ব্যাট করা ভারতীয়দের তালিকায় তাঁর গড় (৫৪.২০) আজও থেকে গিয়েছে সবার উঁচুতেই।
জানুয়ারি ২৫, ১৯৮৮। রাজকোটে জন্ম ২০১০-১১ থেকে শুরু করে এখনও অবধি ৯৫ টেস্ট খেলা চেতেশ্বর পূজারার। অফফর্মের জন্য সাম্প্রতিক অতীতে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়তে হলেও চলতি কাউন্টি মরশুমে বিলেতের মাটিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন সৌরাষ্ট্রের এই টপ-অর্ডার ব্যাটার।
জানুয়ারি ২২, ১৯৯০। দিল্লিতে জন্ম ২০১৬-১৭ থেকে শুরু করে এখনও অবধি ৬ টেস্ট খেলা হরিয়ানভি অফস্পিনার জয়ন্ত যাদবের।
দেশীয় ক্রিকেট ক্যালেন্ডারে জানুয়ারির পাতায় চোখ বুলোলে নজরে আসে আর-একটি বিশেষ তথ্যও। মাসের গোটা প্রথম সপ্তাটা জুড়েই জন্ম হয়েছে তিনশো তিনের কোনও না কোনও প্রতিনিধির। প্রসঙ্গত, মোট সংখ্যাটা বারো। সপ্তাভর একনাগাড়ে কারও না কারও ভূমিষ্ঠ হয়ে চলার এমন বিচিত্র নজির নির্মিত হয়নি দেশীয় ক্রিকেট ক্যালেন্ডারের পাতায় আর কোনও মাসের সূচনাতেই।
কাছাকাছি দৃষ্টান্ত ধরা যায় যথাক্রমে অগাস্ট ও সেপ্টেম্বরের প্রথম ছ’ দিনে এগারো ও নয় ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটারের পৃথিবীর আলো দেখার ঘটনাকে। এই কুড়িজনের উনিশের নামই হরেক সূত্রে ইতিমধ্যে এসেছে আমাদের আলোচনায়। ঊহ্য ছিল ১৯৮৭-৮৮ থেকে ১৯৮৯-৯০ পর্বে ১৩ টেস্ট খেলা হায়দরাবাদি অফস্পিনার আরশাদ আয়ুবের নামটাই। বেশ প্রতিশ্রুতি জাগিয়েই শুরু করা আয়ুবের ব্যাটের হাতটাও ছিল চমৎকার। অগাস্ট ২, ১৯৫৮-য় হায়দরাবাদে জন্ম এঁর।
তবে ক্যালেন্ডারের পাতায় ভারতবর্ষের প্রতি ক্রিকেট দেবতার অবিচ্ছিন্ন দাক্ষিণ্য প্রদর্শনের হদিস মেলে অক্টোবর ১০—১৮ সময়সীমায় একাদিক্রমে ন’ দিন। লক্ষণীয় এই অধ্যায়ের অন্তিম তারিখটি পূর্বোক্ত সেই ১৮ অক্টোবর। এক যাত্রায় চার ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটারের ভূমিষ্ঠ হওয়া দু’টি তারিখের প্রথমটি। তিনশো তিনের ভিড়ে এই ন’ দিনে জন্ম মোট ষোলোজনের। এঁদের মধ্যে তেরোর নামধাম বিভিন্ন সূত্রে ইতিমধ্যেই এসেছে আমাদের আলোচনায়। দেখে নেওয়া যাক বাকি তিনের খতিয়ানও।
অক্টোবর ১০, ১৯৩৩। কোলাপুরে জন্ম নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৯৫৫-৫৬ বোম্বে (ব্র্যাবোর্ন) টেস্ট (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ৪১৭) খেলা মারাঠি পেসার সদাশিব পাটিলের।
অক্টোবর ১৪, ১৯৮১। দিল্লিতে জন্ম ২০০৪-০৫ থেকে ২০১৬-১৭ পর্বে ৫৮ টেস্ট খেলা ন্যাটা ওপেনার গৌতম গম্ভীরের। বীরেন্দ্র শেহবাগের সঙ্গে ঘরোয়া পর্যায়ে দিল্লি ও টেস্ট ক্রিকেটের আঙিনায় ভারতীয় ইনিংসের সূচনা করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ছিল যাঁর। এঁদের ডানহাতি-বামহাতি জুটি বেশ সমস্যাতেই ফেলত বিপক্ষ বোলারদের।
অক্টোবর ১৩, ১৯৯৩। কাকিনাডায় জন্ম ২০১৮ থেকে শুরু করে এখনও অবধি ১৫ টেস্ট খেলা হায়দরাবাদি মিডল-অর্ডার ব্যাটার হনুমা বিহারির। হ্যামস্ট্রিং-এর যন্ত্রণা সয়েও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে শেষ তিন ঘণ্টা দাঁত কামড়ে বাইশ গজে পড়ে থেকে ২০২০-২১ সিডনি টেস্ট (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ২,৪০২) বাঁচানোর সূত্রেই ভারতীয় ক্রিকেট রোমান্টিকের স্মৃতিতে অক্ষয় থাকবে যাঁর নামটি।
অক্টোবরে ভূমিষ্ঠ বিয়াল্লিশ ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটারের মধ্যে চল্লিশকে নিয়েই হয়ে গেল আমাদের আলোচনা। কী হবে আর দু’টি নাম ফেলে রেখে?
অক্টোবর ২৬, ১৯৫০। মাদ্রাজে জন্ম ১৯৮০-৮১ অকল্যান্ড টেস্ট (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ৮৯৯) খেলা তামিল মিডল-অর্ডার ব্যাটার তিরুমালাই শ্রীনিবাসনের। একটু বেশি বয়সেই পাদপ্রদীপের আলোয় এসেছিলেন মানুষটি।
অক্টোবর ২৩, ১৯৮৭। মীরাটে জন্ম ২০১৪-১৫ অ্যাডিলেড টেস্ট (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ২,১৪৮) খেলা লেগস্পিনার কর্ণ শর্মার। ঘরোয়া ক্রিকেটে ইনি প্রতিনিধিত্ব করেছেন বিদর্ভ ও রেলওয়েজের।
জানুয়ারি আর অক্টোবরের পাতা দু’টি এই ক্ষণে ক্যালেন্ডার থেকে ছিঁড়ে ফেলে দিতে পারেন পাঠক।
দুশো দু’টির মধ্যে একশো ছিয়াশিটি গ্রেগরিয়ান তারিখের খতিয়ানেই চোখ বুলানো হয়ে গেল আমাদের। যার সূত্রে এখনও অবধি আলোচনা হল দুশো পঁচাশি ভাগ্যবান ভারতীয় পুরুষ সম্পর্কেই। ইতিমধ্যে জানুয়ারি ও অক্টোবরের পাশাপাশি জুন ও জুলাইয়ের পাতা দু’টিও যে কখন অগোচরেই খসে পড়েছে ক্যালেন্ডার থেকে টেরও পাননি পাঠক।
এখনও আলোচনায় না আসা ষোলোটি তারিখ সেই হিসেবে ছড়িয়ে রয়েছে ক্যালেন্ডারের বাকি আটটি পাতায়।
এই দীর্ঘ নিবন্ধের প্রায় শেষপর্বে উপনীত হয়ে এবার আমরা দেখে নেব সেই দুশো দু’টি জন্মদিন ও একশো তেষট্টিটি নিষ্ফলা তারিখ কোথায় কোথায় ছড়িয়ে রয়েছে গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডারে। মাস, জন্মদিন ও নিষ্ফলা দিবসের সংখ্যার ক্রমে দেখে নিতে হবে নীচের তালিকাটি।