আপাতভাবে এই অপ্রিয় সত্যিটাকে স্বীকার করে নিতে লজ্জা থাকা উচিত নয়।নিস্প্রাণ উইকেটে হেভিওয়েট ভারতীয় স্পিনারদের দৃষ্টিকটুভাবে নিস্প্রভ থাকার যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা কিন্তু নিখাদ ক্রিকেটীয়।
পরিসংখ্যান এর পক্ষপাতহীন দাবী গত পাঁচ ছয় বছরে ভারতের দেশের মাঠে জেতা টেস্ট ম্যাচের সিংহভাগই অর্জিত স্পিনারদের দৌলতে এবং খুব সহজবোধ্যভাবে তাদের পছন্দের সারফেসে। নাগপুর ও দিল্লীর পর ইন্দোরের চিত্রনাট্যও ব্যতিক্রমী হওয়ার কথা ছিল না যদি না প্রথম ইনিংসে রোহিতরা নিঃশর্ত নিঃশব্দে আত্মসমর্পণ করে না বসতেন এবং আমেদাবাদ এর গল্পকে যে সম্পূর্ণ ভিন্ন গ্রহের বলে মনে হচ্ছে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করলে তাতে অত্যাশ্চর্য ম্যাজিকের কোন উপাদান নেই। ভারতের মাটিতে এরকম পাটা উইকেট শেষ কবে আন্তর্জাতিক ম্যাচে দেখা গেছে মনে করা যাচ্ছে না।ব্যাটসম্যানের অবিবেচনাপ্রসূত হঠকারিতা ছাড়া এখানে চটজলদি সাফল্যের শর্টকাট রেসিপি রাজনীতির ময়দানে নৈতিকতার মতই দূর্লভ।অশ্বিন জাদেজাদের সীমাবদ্ধতা খোয়াজা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন এই পিচে। গুটিকয়েক ক্ষেত্রে শামি আর জাদেজা ছাড়া কেউ সামান্যতম বিব্রতও করতে না পারায় অঘটন না ঘটলে দ্বিশতরান নিশ্চিত বলে মনে হচ্ছে।পার্টনার অবশ্য তুলনামূলকভাবে বেশি আগ্রাসী মেজাজে খেলছেন।ক্যামেরুণ গ্রিন এর প্রথম টেস্ট শতরান অবশ্যই বড় পাওনা এবং এই জুটির দীর্ঘস্থায়িত্ব রোহিতের দুশ্চিন্তাবৃদ্ধির অন্যতম অনুঘটক হিসেবে বিবেচিত হতেই পারতো যদি অশ্বিনের চমকপ্রদ স্পেলটা না থাকতো। আপাতত ৪০৬/৭ এর কাহিনীতে পাঁচশোর দিকে যাওয়ার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।সেটা বাস্তবায়িত হলে টপ অর্ডার এর ওপর গুরুদায়িত্ব বেসামাল তরণীকে সঠিক দিশা দেখানোর। তৃতীয় দিন থেকে বল ঘুরতে শুরু করলে অবশ্য অন্য কথা।অন্যথা এখনও পর্যন্ত ব্যাটসম্যানদের প্রতি বাইশ গজের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের প্রেক্ষিতে ভারতীয় ব্যাটিং ফের বিপর্যস্ত হতে পারে এমন ভাবনাকে অলীক বলে মনে হচ্ছে।যদিও মহান অনিশ্চয়তার খেলা হিসেবে ক্রিকেটের একটা ঐতিহ্যমন্ডিত সুনাম আছে, চাপের মুখে টিম ইন্ডিয়ার জ্বলে ওঠার চিরাচরিত প্রবনতার কথা মাথায় রেখে ভরাডুবির আশঙ্কা তেমন দানা বাঁধছে না।